ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ডাটা লিঙ্ক লেয়ার : ভূমিকা (DCN – Data-link Layer Introduction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ডাটা লিঙ্ক লেয়ার ওসিআই মডেলের দ্বিতীয় লেয়ার। এই লেয়ার জটিল লেয়ারগুলোর মধ্যে একটি, এর কিছু জটিল ফাংশনালিটি ও দায়িত্বও আছে।এটি হার্ডওয়ারগত তথ্য গোপন করে উপরের লেয়ারে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করে।

ডাটা লিঙ্ক লেয়ার এমন দুটি হোষ্টের মাঝে কাজ করে যারা কিছ কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি সম্পৃক্ত, এই সরাসরি সম্পৃক্ততা দুটি পয়েন্টের মধ্যে বা সম্প্রচারগতও হতে পারে। ব্রডকাস্ট নেটওয়ার্কের সিস্টেম একই লিঙ্কে থাকে। ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের কাজ আরও জটিল হয়ে যায় যখন একক সংঘর্ষ ডোমেইনে সেটিকে অনেকগুলো হোষ্ট নিয়ে কাজ করতে হয়।

ডাটা স্ট্রিমকে বাইট বাই বাইট সিগন্যালে রূপান্তরিত করা ও তাকে সংশ্লিষ্ট হার্ডওয়ারে প্রেরণের দায়িত্বও ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের। রিসিভিং এন্ডে ডাটা লিঙ্ক লেয়ার হার্ডওয়ার থেকে ডাটা নিয়ে ফ্রেম ফরমেটে রূপ দিয়ে ঊর্ধ্বতন লেয়ারে প্রেরণ করে। ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের দুটি সাব লেয়ার আছে,

  • লজিকাল লিঙ্ক কন্ট্রোলঃ এটি প্রটোকল, ফ্লো কন্ট্রোল ও এরর কন্ট্রোল নিয়ে কাজ করে।
  • মিডিয়া এক্সেস কন্ট্রোলঃ এটি মাধ্যমের প্রকৃত কন্ট্রোল নিয়ে কাজ করে।

 

ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের কিছু ফাংশনালিটি আছে, এগুলো হল,

  • ফ্রেমিংঃ ডাটা লিঙ্ক লেয়ার নেটওয়ার্ক লেয়ার থেকে ডাটা প্যাকেট নিয়ে ফ্রেমে প্রক্রিয়াজাত করে।
  • এড্রেসিংঃ ডাটা লিঙ্ক লেয়ার লেয়ার-২ হার্ডওয়ার এড্রেসিং মেকানিজম প্রবর্তন করে।
  • সিনক্রোনাইজেশনঃ যখন ডাটা ফ্রেমকে লিঙ্কে পাঠানো হয় তখন উভয় যন্ত্রকে সমন্বিত হতে হয়।
  • এরর কন্ট্রোলঃ এটি সিগন্যাল সংক্রান্ত ভুল নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।
  • ফ্লো কন্ট্রোলঃ দুটি যন্ত্রের ট্রান্সফারের গতি যেন এক হয় তা নিয়ন্ত্রণে ডাটা লিঙ্ক লেয়ার এটি ব্যবহার করে।
  • মাল্টি এক্সেসঃ মাল্টিপল সিস্টেমে সংঘর্ষ ছাড়া শেয়ারড মিডিয়া ব্যবহারের জন্য এই ফাংশনালিটি প্রয়োজন হয়।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : নেটওয়ার্ক সুইচিং (DCN – Network Switching)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

সুইচিং প্রক্রিয়ায় গন্তব্যের দিকে অগ্রসরমান কোনও পোর্টে অন্য পোর্ট থেকে আসা পকেট অগ্রসর করা হয়। যখন ডাটা একটি পোর্টে আসে তখন তাকে ইনগ্রেস বলে, আর যখন একটি পোর্ট ছেড়ে যায় তখন তাকে বলে এগ্রেস। বোর্ড লেভেলে সুইচিং দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত হয়ে থাকে,

 

  • যোগাযোগবিহীনঃ ফরোয়ার্ডিং টেবিলের সূত্রে ডাটা ফরোয়ার্ড হয়ে থাকে। পূর্ববর্তী কোনও সম্পর্কের প্রয়োজন হয়না, তথ্যসূত্রিতা ঐচ্ছিক।
  • যোগাযোগ সমৃদ্ধঃ লক্ষ্যের দিকে ডাটা সুইচিংএর আগে দুটি এন্ডপয়েন্টের মাঝে একটি প্রাকগঠিত সার্কিট প্রয়োজন হয়, ডাটা সেই সার্কিটে প্রবাহিত(ফরোয়ার্ড) হয়। ট্রান্সফার সম্পন্ন হলে সেই সার্কিট পরবর্তী ব্যবহারের জন্য রেখে দেয়া হয় অথবা তখনি সরিয়ে ফেলা হয়।

 

সার্কিট সুইচিং

যখন দুটি নড কোনও সার্থক যোগাযোগ মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে তখন তাকে সার্কিট সুইচিং বলে। এক্ষেত্রে পূর্বনির্ধারিত রুট প্রয়োজন যা থেকে ডাটা প্রবাহিত হবে, অন্য ডাটা প্রযোজ্য হবে না। সার্কিট সুইচিংএ অবশ্যই সার্কিট গঠিত হতে হবে ।

সার্কিট স্থায়ী ও অস্থায়ী, দুরকমেরই হয়। সার্কিট সুইচিং ব্যবহার করা এপ্লিকেশনগুলো তিনটি ধাপের মধ্য দিয়ে যায়,

 

  • সার্কিট প্রতিষ্ঠা করা,
  • ডাটা ট্রান্সফার,
  • সার্কিটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা

সার্কিট সুইচিং

 

সার্কিট সুইচিং ভয়েস এপ্লিকেশনের জন্য তৈরি হয়েছিল। টেলিফোন সার্কিট সুইচিংএর সবচেয়ে ভাল উদাহরণ। কল করার আগে যে কল করছে আর যাকে কল করা হচ্ছে তাদের মধ্যে নেটওয়ার্কে ভার্চুয়াল পাথ তৈরি হচ্ছে।

 

 

ম্যাসেজ সুইচিং

সার্কিট সুইচিং ও প্যাকেট সুইচিংএর মধ্যবর্তী ধাপ হল ম্যাসেজ সুইচিং, এতে পুরো ম্যাসেজকে একটি ডাটা ইউনিট হিসেবে ধরা হয় এবং সম্পূর্ণ কাঠামোকে সুইচিং বা ট্রান্সফার করানো হয়। ম্যাসেজ সুইচিংএ কাজ করা কোনও সুইচ প্রথমে পুরো ম্যাসেজ রিসিভ করে বাফার করতে থাকে, পরবর্তী হপে ট্রান্সফার করার মত রিসোর্স পাওয়ার আগপর্যন্ত। পরবর্তী হপে বড় ম্যাসেজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে ম্যাসেজ জমা করে রাখা হয়, সুইচ অপেক্ষা করে।

ম্যাসেজ সুইচিং

এই পদ্ধতিকে সার্কিট সুইচিংএর বিকল্প হিসেবে ধরা হয়।

 

ম্যাসেজ সুইচিংএর কিছু ড্রব্যাক আছে,

 

  • ট্রানজিট পাথের সকল সার্কিটে ম্যাসেজ সংরক্ষণের উপযুক্ত পর্যাপ্ত জায়গা প্রয়োজন,
  • স্টোর-এন্ড-ফরোয়ার্ড ব্যবস্থা ও রিসোর্স প্রাপ্যতার জন্য অপেক্ষা করার জন্য ম্যাসেজ সুইচিং অনেক ধীর প্রক্রিয়া,
  • ম্যাসেজ সুইচিং স্ট্রিমিং মিডিয়া ও রিয়েলটাইম এপ্লিকেশনের জন্য উপযোগী সমাধান নয়।

 

 

প্যাকেট সুইচিং

ম্যাসেজ সুইচিংএর সময় কমানো থেকে প্যাকেট সুইচিং ধারনার উদ্ভব, এতে ম্যাসেজকে ছোটছোট প্যাকেটে ভাগ করা হয়।সুইচিং তথ্যকে প্রত্যেক প্যাকেটের হিডারে (header) স্বাধীনভাবে সম্প্রচারের জন্য রাখা হয়।

 

প্যাকেট সুইচিং

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : মাল্টিপ্লেক্সিং (DCN – Multiplexing)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

মাল্টিপ্লেক্সিং একটি প্রক্রিয়া যেটিতে কোনও শেয়ারড লিঙ্কে ট্রান্সমিশনের ডিজিটাল ও এনালগ স্ট্রিম একসাথে প্রক্রিয়াজাত হয়। মাল্টিপ্লেক্সিং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মিডিয়ামকে নিম্ন ক্ষমতাসম্পন্ন লজিকাল মিডিয়ামে বিভাজিত করে যা পরবর্তীতে বিভিন্ন স্ট্রিম দ্বারা শেয়ারড হয়। এ প্রক্রিয়ায় আলো (অপটিক্যাল ফাইবার) ও বাতাসে (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি) যোগাযোগ সম্ভব।

 

ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং

ফ্রিকোয়েন্সি যখন বাহক তখন ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং প্রযোজ্য হয়। ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং একধরনের এনালগ প্রযুক্তি, এটি স্পেকট্রাম বা কেরিয়ার ব্যান্ডউইথকে লজিকাল চ্যানেলে ছড়িয়ে দেয় এবং প্রত্যেক চ্যানেলে একজন ইউজার বরাদ্ধ থাকে। চ্যানেল ফ্রিকোয়েন্সির উপর প্রত্যেক ইউজারের অবাধ ও স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ থাকে। কোনও চ্যানেল একটি আরেকটি উপর ওভারল্যাপ করে যায় না, চ্যানেলগুলো গার্ড ব্যান্ড দ্বারা আলাদা করা আছে। গার্ড ব্যান্ড এক ধরণের ফ্রিকোয়েন্সি কোনও চ্যানেলই যাদের ব্যবহার করছে না।

 

টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং

টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং প্রাথমিক অবস্থায় ডিজিটাল সিগন্যালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও এরা এনালগ সিগন্যালের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিংএ শেয়ারড চ্যানেল টাইম স্লটের ভিত্তিতে এর ইউজারদের মধ্যে বন্টিত থাকে। প্রত্যেক ইউজার বরাদ্ধকৃত সময়ের মধ্যে ডাটা ট্রান্সমিট করতে পারে। টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং সমন্বয়মূলক(সিঙ্ক্রোনাইজেশন) মোডে কাজ করে।

 

ওয়েভলেন্থ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং

আলোর বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য থাকে। ফাইবার অপটিক মোডে মাল্টিপল অপটিক্যাল কেরিয়ার সিগন্যাল বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করে অপটিক্যাল ফাইবারে মাল্টিপ্লেক্সড হয়। এটি এনালগ মাল্টিপ্লেক্সিং কৌশল এবং বস্তুত ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিংএর মতই কাজ করে কিন্তু আলোকে সিগন্যাল হিসেবে ব্যবহার করে।

 

উপরন্তু, প্রতিটা তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্য টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং অধিক ডাটা সিগন্যাল সংরক্ষণ সমন্বয় করে।

 

কোড ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং

মাল্টিপল ডাটা সিগন্যাল কোড ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং ব্যবহার করে একক ফ্রিকোয়েন্সির উপর দিয়ে ট্রান্সমিটেড হতে পারে। ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং ফ্রিকোয়েন্সিকে ক্ষুদ্রতর চ্যানেলে ভাগ করে ফেলে কিন্তু কোড ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং ব্যবহারকারীকে ইউনিক কোড ব্যবহার করে পূর্ণ ব্যান্ডউইথ ও সবসময় ট্রান্সমিশনের সুযোগ দেয়। কোড ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং সিগন্যাল ছড়িয়ে দিতে অরথোগোনাল কোড ব্যবহার করে। প্রত্যেক ষ্টেশন ‘চিপ’ নামক ইউনিক কোড দ্বারা নির্ধারিত। সিগন্যাল এসব কোডের সাথে ব্যান্ডউইথের ভেতরে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারে, রিসিভার অর্থাৎ সিগন্যাল গ্রহণকারী আগে থেকেই জানে ‘চিপ কোড’ সিগন্যাল গ্রহণ করা হতে পারে।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ওয়ারলেস ট্রান্সমিশন (DCN – Wireless Transmission)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ওয়ারলেস ট্রান্সমিশন আনগাইডেড মিডিয়ার একটি রূপ। ওয়ারলেস যোগাযোগের ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক যন্ত্রের মধ্যে বস্তুগত কোনও সম্পর্ক স্থাপিত হয় না, বেতার ব্যবস্থায় যোগাযোগ সম্পন্ন হয়। ওয়ারলেস সিগন্যাল বাতাসে ছড়ায় এবং উপযুক্ত এন্টেনা দ্বারা গৃহীত ও এর ব্যাখ্যা বিবৃত হয়। যখন কম্পিউটার বা বেতার যন্ত্রের ইলেকট্রিক সার্কিটে এন্টেনা লাগানো হয় তখন এটি ডিজিটাল ডাটাকে বেতার সিগন্যালে পরিবর্তিত করে এবং এর ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জের মধ্যে সবখানে ছড়িয়ে দেয়। অপর প্রান্তের গ্রহীতা সেই বেতার সিগন্যাল গ্রহণ করে তাকে আবারো ডিজিটাল ডাটায় পরিণত করে।

ওয়ারলেস ট্রান্সমিশন

 

রেডিও ট্রান্সমিশন

রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা সহজ কারণ এগুলোর বড় তরঙ্গদৈর্ঘ্য দেয়াল বা এরকম কাঠামো ভেদ করে যেতে পারে। এক মিলিমিটারের মত ক্ষুদ্র থেকে ১ লক্ষ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃহৎ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বেতার তরঙ্গ হতে পারে। ৩ হার্জ(অত্যন্ত ছোট) থেকে ৩০০ গিগাহার্জ(অত্যন্ত বড়) রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি হতে পারে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ছয়টি ব্যান্ডে ভাগ করা আছে।

রেডিও ট্রান্সমিশন

 

রেডিও ট্রান্সমিশন আর্থ

 

মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন

১০০ মেগাহার্জের বেশি তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ সোজা লাইনে চলার প্রবণতা দেখায় এবং নির্দিষ্ট ষ্টেশনে বিমিংএর মাধ্যমে এদের দ্বারা সিগন্যাল প্রেরণ করা যায়। যেহেতু মাইক্রোওয়েভ সরল রেখায় চলে, তাই প্রেরক ও গ্রাহক যন্ত্র দৃষ্টিরেখার সমান্তরাল হতে হয়। মাইক্রোওয়েভের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১ মিলিমিটার থেকে ১ মিটার ও ফ্রিকোয়েন্সি ৩০০ গিগাহার্জ থেকে ৪৩০ টেরাহার্জ পর্যন্ত হতে পারে।

 

মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন

 

ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন

ইনফ্রারেড তরঙ্গ দৃশ্যমান আলোক বর্ণালী ও মাইক্রোওয়েভের মাঝামাঝি একটি বিষয়, তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৭০০ ন্যানোমিটার থেকে ১ মিলিমিটার ও ফ্রিকোয়েন্সি ৩০০ মেগাহার্জ থেকে ৩০০ গিগাহার্জ পর্যন্ত হতে পারে।স্বল্পদূরত্বে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যেমন টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোলে এদের ব্যবহার করা হয়।

 

আলোক ট্রান্সমিশন

সর্বোচ্চ তাড়িতচৌম্বক বর্ণালী যা ডাটা ট্রান্সফারের জন্য ব্যবহৃত হয় তা হল আলোক বা অপটিক্যাল সিগনালিং। লেজার পদ্ধতিতে এটি সম্ভব হয়। লেজার দেয়াল, বৃষ্টি বা ঘন কুয়াশা ভেদ করতে পারে না, এর ব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সির কারণে এটি সরল রেখায় চলে।

আলোক ট্রান্সমিশন

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ট্রান্সমিশন মিডিয়া (DCN – Transmission Media)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ট্রান্সমিশন মিডিয়া হল কম্পিউটার নেটওয়ার্কের যোগাযোগের বস্তুগত মাধ্যম।

 

চৌম্বক মাধ্যম

নেটওয়ার্কের সৃষ্টিরও আগে থেকে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডাটা স্থানান্তর ও সংরক্ষণের জন্য চৌম্বক মাধ্যম ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমান যুগের দ্রুতগতির ইন্টারনেটের তুলনায় একটু পুরনো ফ্যাশনের হলেও, বিশাল আকারের ডাটার ক্ষেত্রে এখনও চৌম্বক মাধ্যম চলছে।

 

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল একক মাধ্যম থেকে দুটো প্লাস্টিকে মোড়ানো তামার তার যা পরস্পরের উপর জড়ানো থাকে। একটি তার মূল সিগন্যাল বহন করে, অন্যটি গ্রাউন্ড রেফারেন্সের জন্য ব্যবহৃত হয়। টুইস্টগুলো নয়েজ ও ক্রসটক কমায়(তাড়িতচৌম্বক ইন্টারফেরেন্সের জন্য)। দুই ধরণের টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল হয়,

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

  • শিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার(এসটিপি)ক্যাবল।
  • আনশিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার(ইউটিপি) ক্যাবল।

 

কোএক্সিয়াল ক্যাবল

কোএক্সিয়াল ক্যাবলে তামার দুটি তার থাকে, মূল তারটি কেন্দ্রে থাকে, এটি নিরেট কন্ডাক্টর দিয়ে তৈরি। মূল অংশটি ইন্সুলেটর মোড়ানো আবরণ দিয়ে আলাদা করা, এটি একটি প্লাস্টিকের আবরণ দিয়ে আবৃত।সেই আবরনের উপরে দ্বিতীয় তারটি জড়ানো থাকে। এর উপরেও ইন্সুলেটর মোড়ানো আবরণ থাকে। পুরো জিনিসটি প্লাস্টিকের আবরণ দ্বারা জড়ানো থাকে। এর কাঠামোগত কারণে এটি টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলের চেয়ে বেশি ফ্রিকোয়েন্সির সিগন্যাল বহন করতে পারে।

কোএক্সিয়াল ক্যাবল

 

পাওয়ার লাইন

পাওয়ার লাইন কমুনিকেশন লেয়ার-১ প্রযুক্তি যা ডাটা সিগন্যাল ট্রান্সমিট করতে পাওয়ার ক্যাবল ব্যবহার করে। পাওয়ার লাইন কমুনিকেশনে তারের মাধ্যমে মডিউলেটেড ডাটা প্রেরণ করা হয়। অপর প্রান্তের গ্রহীতা সেই ডাটাকে ডিমডিউলেটেড করে ইন্টারপ্রেট করে। দুই ধরণের পাওয়ার লাইন পাওয়া যায়,

  • সরু ব্যান্ডের পিএলসি এবং
  • ব্রডব্যান্ড পিএলসি

 

ফাইবার অপটিক্স

ফাইবার অপটিক্স আলোর গুণাবলী অনুসারে কাজ করে। ক্রান্তিকোণে আলো পরলে তা ৯০ ডিগ্রি কোণে প্রতিফলিত হয়। এই মূলনীতি ফাইবার অপটিক্সে কাজে লাগানো হয়। ফাইবার অপটিক্সের মূল(কোর)অংশকে উচ্চ মানের কাঁচ বা প্লাস্টিক দ্বারা তৈরি করা হয়। এর ভিতর দিয়ে আলো প্রবাহিত হয়, অন্য প্রান্তে সেই নিঃসৃত আলোর স্ট্রিমকে বৈদ্যুতিক ডাটায় পরিণত করা হয়। এটি সবচেয়ে বেশি গতির মাধ্যম। একক মোড ফাইবার ও বহু মোড ফাইবার, এই দুই প্রকার ফাইবার একাজে পাওয়া যায়। ফাইবার অপটিক্স একমুখী ও দ্বিমুখী এই দুই প্রকারের সক্ষমতা সম্পন্ন হতে পারে।

ফাইবার অপটিক্স

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : এনালগ ট্রান্সমিশন : (DCN – Analog Transmission)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

এনালগ মাধ্যমে ডাটা প্রেরণ করতে হলে ডাটাকে এনালগ সিগন্যালে রূপান্তরিত করে নিতে হয়। ডাটা রূপান্তরের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় হয়ে থাকে,

  • ব্যান্ডপাসঃ ফিল্টারের মাধ্যমে চাহিদামত ফ্রিকোয়েন্সি ফিল্টারিং ও অতিক্রম করানো হয়।
  • লো পাসঃ লো পাস একধরনের ফিল্টার যার মধ্য দিয়ে কম ফ্রিকোয়েন্সির সিগন্যাল প্রেরিত হয়।

 

ডিজিটাল থেকে এনলগে রূপান্তর

যখন এক কম্পিউটার থেকে অন্য কোনটিতে এনালগ ক্যারিয়ারের মাধ্যমে ডাটা স্থানান্তর করা হ্য় তখন সেটি প্রথমে এনালগ সিগন্যালে রূপান্তরিত হয়, এনালগ সিগন্যালকে সেই ডাটাকে ডিজিটাল ডাটায় রিফ্লেক্ট করার মত করে মডিফাই করে নেয়া হয়। কোনও এনালগ ডাটা এর এমপ্লিচিউড, ফ্রিকোয়েন্সি ও ফেজের মাধ্যমে বিশেষায়িত হয়। ডিজিটাল থেকে এনলগে রূপান্তর তিন ধরণের হতে পারে,

  • এমপ্লিচিউড শিফট কীইংঃ এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় এনালগ ক্যারিয়ার সিগন্যালের এমপ্লিচিউড বাইনারি ডাটা প্রদর্শনের উদ্দেশে রূপান্তরিত হয়।

এমপ্লিচিউড শিফট কীইং

  • ফ্রিকোয়েন্সি শিফট কীইংঃ এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় এনালগ ক্যারিয়ার সিগন্যালের ফ্রিকোয়েন্সি বাইনারি ডাটা প্রদর্শনের উদ্দেশে রূপান্তরিত হয়। এই পদ্ধতি দুটি ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে।

ফ্রিকোয়েন্সি শিফট কীইং

  • ফেজ শিফট কীইংঃ এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় মূল ক্যারিয়ার সিগন্যালের ফেজ বাইনারি ডাটা প্রদর্শনের উদ্দেশে পরিবর্তিত হয়।

ফেজ শিফট কীইং

  • কোয়াড্রেচার ফেজ শিফট কীইংঃ কোয়াড্রেচার ফেজ শিফট কীইং দুটি বাইনারি ডিজিট একসাথে প্রদর্শনের জন্য ফেজকে রূপান্তরিত করে। এটি দুটি ভিন্ন ফেজে হয়ে থাকে।

 

এনালগ থেকে এনলগে রূপান্তর

এনালগ ডাটা প্রদর্শনের জন্যও এনালগ সিগন্যাল রূপান্তরিত হতে পারে। এই প্রক্রিয়াকে এনালগ মডুলেশন বলা হয়। ব্যান্ডপাস যখন হয় তখন এনালগ মডুলেশন প্রয়োজন হয়। এটি তিনভাবে হতে পারে,

এনালগ থেকে এনলগে রূপান্তর

  • এমপ্লিচিউড মডুলেশনঃ এই মডুলেশন প্রক্রিয়ায় ক্যারিয়ার সিগন্যালের এমপ্লিচিউড এনালগ ডাটা প্রদর্শনের উদ্দেশে রূপান্তরিত হয়।

এমপ্লিচিউড মডুলেশন

  • ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশনঃ এই মডুলেশন প্রক্রিয়ায় ক্যারিয়ার সিগন্যালের ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশনের ভোল্টেজ লেভেলের পরিবর্তন(এনালগ ডাটা)প্রদর্শনের উদ্দেশে রূপান্তরিত হয়।

ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশন

  • ফেজ মডুলেশনঃ এই মডুলেশন প্রক্রিয়ায় ক্যারিয়ার সিগন্যালের ফেজ মডুলেশনের ভোল্টেজ লেভেলের পরিবর্তন(এনালগ ডাটা)প্রদর্শনের উদ্দেশে পরিবর্তিত হয়।

ফেজ মডুলেশন

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ডিজিটাল ট্রান্সমিশন : (DCN – Digital Transmission)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ডাটা বা তথ্য দুইভাবে সংরক্ষণ করা যায়, ডিজিটাল ও এনালগ পদ্ধতিতে। কম্পিউটারে ডাটা সংরক্ষণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হয়। ডাটার মত সিগন্যালও ডিজিটাল ও এনালগ এই দুই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায়। ডাটাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রান্সমিশনের জন্য একে আগে ডিজিটাল ফরম্যাটে পরিবর্তিত করে নিতে হয়।

 

ডিজিটাল থেকে ডিজিটালে রূপান্তর

লাইন কোডিং ও ব্লক কোডিং, এই দুই ভাবে ডিজিটাল থেকে ডিজিটালে রূপান্তর করা যায়। সব ধরণের যোগাযোগের জন্য লাইন কোডিং জরুরী যেখানে ব্লক কোডিং ঐচ্ছিক।

 

লাইন কোডিং

ডিজিটাল ডাটাকে ডিজিটাল সিগন্যালে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে লাইন কোডিং বলে। ডিজিটাল ডাটাকে বাইনারি ফরম্যাটে পাওয়া যায়, একে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সিরিজের অন্তর্নিহিতভাবে সংরক্ষণ করা যায়।

লাইন কোডিং

লাইন কোডিং

 

ইউনিপোলার এনকোডিং

ইউনিপোলার এনকোডিং স্কিম ডাটা রিপ্রেজেন্ট করার জন্য সিঙ্গেল ভোল্টেজ লেভেল ব্যবহার করে, এক্ষেত্রে বাইনারি ১ প্রকাশ করতে উঁচু ভোল্টেজ ও বাইনারি ০ প্রকাশ করতে কোনও ভোল্টেজ ট্রান্সমিটেড হয় না। এদের ইউনিপোলার নন-রিটার্ন-টু-জিরোও বলা হয়।

ইউনিপোলার এনকোডিং

 

পোলার এনকোডিং

পোলার এনকোডিং স্কিম বাইনারি মান প্রকাশের জন্য মাল্টিপল ভোল্টেজ লেভেল ব্যবহার করে। পোলার এনকোডিং কে চার রূপে পাওয়া যায়,

  • পোলার ননরিটার্ন টু জিরো

পোলার ননরিটার্ন টু জিরো

  • রিটার্ন টু জিরো,

রিটার্ন টু জিরো

  • ম্যানচেস্টার,
  • ডিফারেন্সিয়াল ম্যানচেস্টার

 

বাইপোলার এনকোডিং

বাইপোলার এনকোডিং তিন ধরণের ভোল্টেজ লেভেল ব্যবহার করে, পজেটিভ, নেগেটিভ ও জিরো।

বাইপোলার এনকোডিং

 

ব্লক কোডিং

ব্লক কোডিং তিন ধরণের হয়,

  • ডিভিশন,
  • সাবস্টিটিউশন,
  • কম্বিনেশন

 

ব্লক কোডিং সম্পন্ন হওয়ার পর একে লাইন কোডেড করা হয়।

 

এনালগ থেকে ডিজিটাল রূপান্তর

এনালগ তরঙ্গকে ডিজিটাল ডাটায় পরিণত করতে পালস কোড মডুলেশন ব্যবহার করা হয়। এটি তিন ধাপে হয়,

  • সেম্পলিং

সেম্পলিং

  • কোয়ান্টাইজেশন

কোয়ান্টাইজেশন

  • এনকোডিং

এনকোডিং

 

ট্রান্সমিশন মোড

দুটি কম্পিউটারে কীভাবে ডাটা ট্রান্সমিটেড হবে তা নির্ণয় করে ট্রান্সমিশন মোড,এর দুটি প্রকরণ ঘটে,

  • প্যারালাল ট্রান্সমিশন

প্যারালাল ট্রান্সমিশন

  • সিরিয়াল ট্রান্সমিশন।

সিরিয়াল ট্রান্সমিশন

 

সিরিয়াল ট্রান্সমিশন দুই রকমের হয়,

  • এসিনক্রোনাস সিরিয়াল ট্রান্সমিশন
  • সিনক্রোনাস সিরিয়াল ট্রান্সমিশন

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ফিজিকাল লেয়ার : ভূমিকা (DCN – Physical Layer Introduction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ওএসআই মডেলে ফিজিকাল লেয়ার মূল হার্ডওয়ার ও সিগনালিং কৌশলের সমন্বয় সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, ওএসআই মডেলে ফিজিকাল লেয়ারই একমাত্র লেয়ার যেটি দুটি ভিন্ন ষ্টেশনের বস্তুগত যোগাযোগ নিয়ে কাজ করে। এই লেয়ার হার্ডওয়ার ইকুইপমেন্ট, ক্যাবলিং, ওয়ারিং এবং বাইনারি সিগন্যাল প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পালস ও ফ্রিকোয়েন্সি বিবৃত করে।

ফিজিকাল লেয়ার এর সার্ভিসকে ডাটা লিঙ্ক লেয়ারে অর্পণ করে। ডাটা লিঙ্ক লেয়ার ফিজিকাল লেয়ারে ফ্রেম প্রদান করে। ফিজিকাল লেয়ার সেগুলোকে ইলেক্ট্রিক্যাল পালসে পরিণত করে, যা বাইনারি ডাটারূপে প্রতীয়মান হয়। সেই বাইনারি ডাটা তারবিহীন বা তারযুক্ত মাধ্যমে প্রেরিত হয়।

 

সিগন্যাল

ফিজিকাল মাধ্যমে ডাটা যখন প্রেরিত হয়, সেটিকে প্রথমে তাড়িতচৌম্বক সিগন্যালে রূপান্তরিত করে নেয়া হয়। ডাটা নিজে এনালগ(যেমন মানবকণ্ঠ) বা ডিজিটাল(কোনও ডিস্কে একটি ফাইল)হতে পারে, যেকোনো এনালগ বা ডিজিটাল উভয় প্রকার ডাটাকে এনালগ বা ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তরিত করে নেয়া সম্ভব।

  • ডিজিটাল সিগন্যালঃ ডিজিটাল সিগন্যাল প্রকৃতিগতভাবে পৃথক বা অসংলগ্ন, এরা ভোল্টেজ পালসের ক্রম প্রকাশ করে। কম্পিউটার সিস্টেমের সার্কিটসংক্রান্ত অংশে ডিজিটাল সিগন্যাল ব্যবহৃত হয়।
  • এনালগ সিগন্যালঃ এনালগ সিগন্যাল স্বাভাবিকভাবে পাওয়া ক্রমাগত সিগন্যাল, যা ক্রমাগত আসা তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ দ্বারা প্রকাশিত।

 

ট্রান্সমিশনে বিঘ্ন

সিগন্যালগুলো যখন মাধ্যমগুলোর ভেতর দিয়ে ভ্রমণ করে, অনেক সময় সেখানে বিঘ্ন ঘটতে পারে, এর প্রধান প্রধান কারণগুলো হল,

  • ডাটা অপচয়
  • বিচ্ছুরণ
  • বিলম্ব সংক্রান্ত বিকৃতি
  • নয়েজ

 

নয়েজঃ এনালগ বা ডিজিটাল সিগন্যালে নিয়মিত বিঘ্ন বা অস্থিরতাকে সিগন্যালের নয়েজ বলে। এটি মূল ডাটাকে বিকৃত করে। নয়েজ নিচের যেকোনো রকমের হতে পারে,

  • থারমাল নয়েজ
  • ইন্টারমডুলেশন
  • ক্রসটক
  • ইম্পালস

 

রান্সমিশন মিডিয়া

দুটি কম্পিউটার ব্যবস্থার তথ্য যে মাধ্যমের ভেতর দিয়ে প্রেরিত হয় তাকে ট্রান্সমিশন মিডিয়া বলে, এটি দুই ধরণের হতে পারে,

  • গাইডেড মিডিয়াঃ সকল তারজাতীয় মিডিয়া গাইডেড মিডিয়া, যেমন ইউটিপি, কোএক্সিয়াল ক্যাবল এবং ফাইবার অপটিক্স। এই মিডিয়ায় প্রেরক এবং গ্রহীতা সরাসরি যুক্ত থাকে।
  • আনগাইডেড মিডিয়াঃ তারবিহীন বা বেতার মিডিয়াকে আনগাইডেড মিডিয়া বলে ধরা হয়।

 

চ্যানেল ক্যাপাসিটি

ডাটা ট্রান্সমিশনের গতিকে চ্যানেল ক্যাপাসিটি বলা হয়। এটি বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে,

  • ব্যান্ডউইথ
  • এরর রেট
  • এনকোডিং

 

মাল্টিপ্লেক্সিং

একক মাধ্যমে মাল্টিপল ডাটা স্ট্রিম মেশানো এবং প্রেরণের কৌশলকে মাল্টিপ্লেক্সিং বলে।

 

সুইচিং

এর মাধ্যমে ডাটাকে উৎস থেকে এমন গন্তব্যে প্রেরণ করা হয় যা সরাসরি সংযুক্ত নয়।

 

সুইচিং

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি (DCN – Computer Network Security)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ইন্টারনেটের প্রারম্ভিক সময়গুলোতে এর ব্যবহার কেবল সামরিক ক্ষেত্রে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উন্নয়ন ও গবেষণাকর্মের মাঝে সীমিত ছিল। পরে যখন সব নেটওয়ার্ক মিলে ইন্টারনেট সৃষ্টি হল, তখন তথ্যব্যবস্থা জনগনের জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেল। অতি স্পর্শকাতর তথ্য ও উপাত্ত, মানুষের ব্যাংক ও বাজারসদাই, নাম-পাসওয়ার্ড, ব্যক্তিগত বিষয়আশয় এগুলি সবকিছু নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পরে গেল। সকল নিরাপত্তা ঝুঁকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এদেরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়,

  • ইন্টারাপশনঃ কোনও সাইটে ঢুকতে না পারা বা এজাতীয় সমস্যা।
  • গোপনীয়তা লঙ্ঘনঃ কারো ব্যক্তিগত সীমায় প্রবেশ বা তার বিনা অনুমতিতে বা অগোচরে তথ্য গ্রহণ,
  • ইন্টেগ্রিটিঃ ডাটা সংশোধন বা প্রকৃত অধিকার আছে এমন ব্যক্তির সমন্বয়ে সিস্টেমে বিচরণ সংশ্লিষ্ট বিষয়,
  • অথেনটিসিটিঃ যখন আক্রমণকারী ব্যক্তি হিসেবে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে এবং অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি

বর্তমান বিশ্বের কোনও ব্যবস্থাই শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, কিন্তু ডাটা যখন অনিয়ন্ত্রিত নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেটে প্রবাহিত হয় তখন তার নিরাপত্তার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া যায়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা পদ্ধতি হল ক্রিপ্টোগ্রাফি ।

ক্রিপ্টোগ্রাফি হল এক ধরণের কৌশল যাতে সরল টেক্সট ডাটাকে এনক্রিপ্ট করা হয় যাতে ডাটা বোঝা ও ব্যাখ্যা করা কঠিন হয়। ক্রিপ্টোগ্রাফির বেশ কিছু এলগরিদম বর্তমানে পাওয়া যায়,

  • সিক্রেট কী
  • পাবলিক কী
  • ম্যাসেজ ডাইজেস্ট

 

সিক্রেট কী এনক্রিপশন

প্রেরক ও গ্রাহকের কাছে গোপন সূত্র(কী) থাকে।

পাবলিক কী এনক্রিপশনঃ এই এনক্রিপশন ব্যবস্থায় সব ইউজারের কাছে গোপন সূত্র(কী) থাকে। শেয়ারড ডোমেইনে এটি সম্ভব নয়।

 

ম্যাসেজ ডাইজেস্ট

প্রকৃত তথ্য প্রেরণ করা হয় না, সাঙ্কেতিক মান প্রেরণ করা হয়। গ্রহীতার প্রান্ত থেকে সেই সাঙ্কেতিক মান অনুধাবন ও নির্ণয় করে ডাটা নির্ণয় করা হয়। এমডি-৫ হেসিং এরকম ম্যাসেজ ডাইজেস্টের উদাহরণ।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : কম্পিউটার নেটওয়ার্ক মডেল (DCN – Computer Network Models)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং একটি জটিল কাজ, যার মধ্যে আছে সফটওয়ার, ফার্মওয়ার, নিচু শ্রেণীর প্রকৌশল, হার্ডওয়ার, এবং ইলেকট্রিক কর্মকাণ্ড। এই কর্মকাণ্ডকে সহজ করার জন্য এটিকে কয়েকটি লেয়ারে ভাগ করা হয়। এই লেয়ারগুলো স্বতন্ত্র ও তাদের নিজস্ব কাজ থাকে, পুরো নেটওয়ার্কিং এই লেয়ারগুলোর উপর নির্ভর করে। লেয়ারগুলো নিজেদের মধ্যে ডাটা আদানপ্রদান করে, কেবলমাত্র ইনপুট ও আউটপুটের জন্য পরস্পরের উপর নির্ভর করে।

 

লেয়ারের কাজ

নেটওয়ার্ক মডেলের লেয়ার স্থাপত্যে একটি পুরো নেটওয়ার্ক প্রক্রিয়া অনেকগুলো ক্ষুদ্র কাজে বিভক্ত থাকে। লেয়ারের যোগাযোগ ব্যবস্থায় কোনও হোষ্টের অধীনে সমগোত্রীয় লেয়ার রিমোট হোষ্টের মাধ্যমে ক্ষুদ্র কাজগুলো করতে পারে। এই কাজগুলো সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের লেয়ারের মাধ্যমে শুরু হয়। সর্বোচ্চ পর্যায়ের লেয়ারে শুরু হলে প্রক্রিয়াটি নিচের লেয়ারের দিকে ধাবিত হয়, একদম নিচের লেয়ারে কাজ শুরু হলে উলটোভাবে প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্ত হয়। প্রত্যেকটি লেয়ার কাজের খণ্ডাংশ সম্পন্ন করতে প্রক্রিয়া, প্রটোকল ও পদ্ধতির সমন্বয় করে।

লেয়ারের কাজ

 

ওএসআই মডেল

ওপেন সিস্টেম ইন্টারকানেক্ট সব কমুনিকেশন সিস্টেমের জন্য আদর্শ, আইএসও দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই মডেলের সাতটি লেয়ার আছে,

 

  • এপ্লিকেশন লেয়ারঃ এপ্লিকেশন ব্যবহারকারীকে ইন্টারফেস ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়,
  • প্রেজেন্টেশন লেয়ারঃ নেটিভ ফরম্যাটের ডাটা কীভাবে পরিবেশিত হবে তা এই লেয়ার নির্ধারণ করে,
  • সেশন লেয়ারঃ এই লেয়ার রিমোট হোষ্টের মধ্যবর্তী সেশন নিয়ন্ত্রণ করে,
  • ট্রান্সপোর্ট লেয়ারঃ হোষ্টগুলোর মাঝে বিতরণ এই লেয়ারের দায়িত্ব,
  • নেটওয়ার্ক লেয়ারঃ এসাইনমেন্ট ও নেটওয়ার্কে হোষ্টগুলোর স্বাতন্ত্র্য নির্দেশ করে,
  • ডাটা লিঙ্ক লেয়ারঃ ডাটা পড়া ও লেখা এই লেয়ারে হয়, লিঙ্ক এরর থাকলে সেটিও এই লেয়ারে সনাক্ত হয়,
  • ফিজিকাল লেয়ারঃ এই লেয়ার হার্ডওয়ার, ক্যাবল সংযোগ ও পাউয়ার আউটপুট , পালস রেট এসব নির্দেশ করে।

 

ইন্টারনেট মডেল

ইন্টারনেট টিসিপি বা আইপি প্রটোকল স্যুইট ব্যবহার করে যা ইন্টারনেট মডেলকে বিবৃত করে। এটি চারটি লেয়ারে বিভক্ত,

  • এপ্লিকেশন লেয়ারঃ এপ্লিকেশন ব্যবহারকারীকে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়, যেমন এফটিপি, এইচটিটিপি ইত্যাদি।
  • ট্রান্সপোর্ট লেয়ারঃ হোষ্টগুলোর মাঝে কীভাবে ডাটা প্রবাহিত হবে তা ঠিক করা এই লেয়ারের দায়িত্ব।
  • ইন্টারনেট লেয়ারঃ ইন্টারনেট প্রটোকল বা আইপি এই লেয়ারে কাজ করে।
  • লিঙ্ক লেয়ারঃ প্রকৃত ডাটা প্রেরণ বা গ্রহণ করার কৌশল এই লেয়ার নির্ধারণ করে।