ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল (DCN – User Datagram Protocol)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

টিসিপি/আইপি প্রটোকল স্যুইটের সরলতম ট্রান্সপোর্ট লেয়ার কমিউনিকেশন প্রটোকল হল ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল । এটিতে কম সংখ্যক যোগাযোগ কৌশল প্রয়োগ করা হয়। ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকলকে অনির্ভরযোগ্য যোগাযোগ প্রটোকল বলা হলেও এটি আইপি সার্ভিস ব্যবহার করে যেটিতে সেরা সরবরাহ কৌশল ব্যবহৃত হয়।

ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকলে ডাটা প্যাকেট গ্রহণকারী কোনোরূপ প্রাপ্তি সংবাদ পাঠায় না , ডাটা প্যাকেট প্রেরণকারীও কোনও ধরণের প্রাপ্তি সংবাদ আশা করে না। এই বিষয়টিই এই প্রক্রিয়াকে একই সাথে সহজ কিন্তু অনির্ভরযোগ্য করেছে।

 

ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকলের রিকোয়ারমেন্ট

একটি প্রশ্ন উঠতে পারে, অনির্ভরযোগ্য প্রটোকল ব্যবহার করে ডাটা ট্রান্সফারের দরকার কি? আমরা ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল তখন ব্যবহার করি যেসব ক্ষেত্রে একনলেজমেন্ট প্যাকেট মূল ডাটার সাথে প্রচুর পরিমান ব্যান্ডউইথ শেয়ার করে। যেমন, ভিডিও স্ট্রিমিংএর সময় এর ব্যবহারকারীর দিকে হাজার হাজার ডাটা প্যাকেটকে ফরোয়ার্ড করা হয়। এসব ডাটা প্যাকেটের সবগুলোর জন্য একনলেজমেন্ট অর্থাৎ প্রাপ্তি সংবাদ ব্যবস্থা করা কঠিন ও তা প্রচুর ব্যান্ডউইথ অপচয় করবে। অন্তর্নিহিত আইপি প্রটোকলের সেরা সরবরাহ কৌশল ডাটা সরবরাহের সর্বোচ্চ সম্ভবনা নিশ্চিত করে। এমনকি ভিডিও স্ট্রিমিংএর সময় অল্প কিছু ডাটা প্যাকেট হারিয়ে গেলেও তা আর তেমন প্রভাব রাখবে না। ভিডিও বা ভয়েজ ট্র্যাফিকের সময় হারানো ডাটা প্যাকেট তেমন প্রভাব রাখে না।

 

ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকলের বৈশিষ্ট্য

  • ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল তখন ব্যবহৃত হয় যখন একনলেজমেন্ট অর্থাৎ প্রাপ্তি সংবাদের কোনও গুরুত্ব নেই,
  • একমুখী ডাটা প্রবাহের জন্য ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল বেশি উপযোগী,
  • ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল সহজ এবং কোয়েরিভিত্তিক যোগাযোগের জন্য উপযোগী,
  • এটি যোগাযোগ ওরিয়েন্টেড নয়,
  • ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল কনজেশন কন্ট্রোল কৌশল ব্যবহারে সক্ষম নয়,
  • এটি ডাটার নির্দেশিত সরবরাহ নিশ্চিত করে না,
  • ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল স্টেটবিহীন,
  • স্ট্রিমিং এপ্লিকেশন যেমন ভিওআইপি, মাল্টিমিডিয়া স্ট্রিমিং এর জন্য বেশি উপযোগী।

 

ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল হেডার

ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকলের হিডার

ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকলের হিডার(header) চারটি মূল প্যারামিটার ব্যবহার করে,

  • সোর্স পোর্ট,
  • ডেসটিনেশন পোর্ট,
  • লেন্থ,
  • চেকসাম

 

ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল অ্যাপ্লিকেশন

যেসব এপ্লিকেশনে ডাটা ট্রান্সফারের জন্য ইউজার ডায়াগ্রাম প্রটোকল ব্যবহৃত হয়,

  • ডোমেইন নেম সার্ভিস,
  • সিম্পল নেটওয়ার্ক মেনেজমেন্ট প্রটোকল,
  • ট্রিভিয়াল ফাইল ট্রান্সফার প্রটোকল,
  • রাউটিং ইনফরমেশন প্রটোকল,
  • কার্বারোতে।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রটোকল (DCN – Transmission Control Protocol)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রটোকল বা টিসিপি ইন্টারনেট প্রটোকল স্যুইটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রটোকলসমূহের একটি। ইন্টারনেটজাতীয় নেটওয়ার্কের ডাটা ট্রান্সমিশনের জন্য এটি একটি বহুল ব্যবহৃত প্রটোকল।

 

বৈশিষ্ট্য

  • এটি একটি নির্ভরযোগ্য প্রটোকল,
  • টিসিপি নিশ্চিত করে, ডাটা যেভাবে প্রেরণ করা হয়েছিল সেভাবেই গ্রহণ করা হয়েছে,
  • টিসিপি যোগাযোগ নির্ভর,
  • টিসিপি ক্রুটি নির্ণয় ও সংশোধন কৌশল ব্যবহার করে,
  • টিসিপি এন্ড টু এন্ড যোগাযোগ ব্যবহার করে,
  • টিসিপি ফ্লো কন্ট্রোল ও সেবার মান প্রদান করে,
  • টিসিপি ক্লায়েন্ট/সার্ভার পয়েন্ট টু পয়েন্ট মোড ব্যবহার করে,
  • টিসিপি ফুল ডুপ্লেক্স সার্ভার ব্যবহার করার সুযোগ দেয়।

 

হিডার

টিসিপি হিডারের দৈর্ঘ্য ২০ বাইট থেকে ৬০ বাইট পর্যন্ত হতে পারে।

এড্রেসিং

দুটি রিমোট হোষ্টের মাঝে যোগাযোগ পোর্ট নাম্বারের ভিত্তিতে হতে পারে। পোর্ট নাম্বার তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত,

  • সিস্টেম পোর্ট,
  • ইউজার পোর্ট,
  • ব্যক্তিগত বা ডাইনামিক পোর্ট

 

কানেকশন ম্যানেজমেন্ট

টিসিপি সার্ভার/ ক্লায়েন্ট মডেলে কাজ করে। যোগাযোগের জন্য ত্রিমুখী সমন্বয় ব্যবহৃত হয়। এরপর যোগাযোগ এসটাব্লিশমেন্টের পরে কাজ সম্পন্ন হলে যোগাযোগ রিলিজ করে দেয়া হয়।

ব্যান্ডউইথ ম্যানেজমেন্ট

টিসিপি ব্যান্ডউইথ ম্যানেজমেন্টের জন্য উইন্ডো সাইজ কনসেপ্ট ব্যবহার করে।

 

এরর কন্ট্রোল ও ফ্লো কন্ট্রোল

ডাটা সেগমেন্টের জন্য কোন ধরণের এপ্লিকেশন প্রসেস দরকার তা জানতে টিসিপি পোর্ট নাম্বার ব্যবহার করে। রিমোট হোষ্টের সাথে সমন্বয় সাধনের জন্য এটি সিকোয়েন্স নাম্বার ব্যবহার করে।

 

মাল্টিপ্লেক্সিং

দুই বা ততোধিক ডাটা স্ট্রিমকে এক সেশনে সমন্বয় করার পদ্ধতিকে মাল্টিপ্লেক্সিং বলে।

 

কনজেশন

অনেক বেশি পরিমানের ডাটা, সিস্টেমে যাদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না তাদের নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়াতে কনজেশনের উদ্ভব। কনজেশন কন্ট্রোল করার জন্য টিসিপির তিন ধরণের এলগরিদম আছে,

  • এডিটিভ ইনক্রিজ, মাল্টিপ্লিকেটিভ ডিক্রিজ ,
  • স্লো স্টার্ট,
  • টাইমআউট রিএক্ট

 

টাইমার ম্যানেজমেন্ট

বিভিন্ন ধরণের কাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য টিসিপি বিভিন্ন ধরণের টাইমার ব্যবহার করে,

  • কিপ এলাইভ টাইমার
  • রিট্রান্সমিশন টাইমার,
  • পারসিস্ট টাইমার,
  • টাইমড ওয়েইট

 

ক্রাশ রিকভারি

টিসিপি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য প্রটোকল, এটি সেগমেন্টে প্রেরণকৃত প্রত্যেকটি বাইটের সিকোয়েন্স বজায় রাখে। কোনও টিসিপি সার্ভার যোগাযোগ চলাকালে ক্রাশ করলে এটি এর সকল হোষ্টের কাছে টিপিডিইউ সম্প্রচার বার্তা পাঠায়।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ট্রান্সপোর্ট লেয়ার : ভূমিকা (DCN – Transport Layer Introduction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ওএসআই মডেলের লেয়ার-৪ ট্রান্সপোর্ট লেয়ার হিসেবে পরিচিত। ডাটা ট্রান্সপোর্ট সঙ্ক্রান্ত সকল মডিউল ও প্রণালী এই লেয়ারে সম্পন্ন হয়। অন্য সকল লেয়ারের মত লেয়ার-৪ ট্রান্সপোর্ট লেয়ারও রিমোট হোষ্টে সদৃশ ট্রান্সপোর্ট লেয়ারে যোগাযোগ বজায় রাখে।

 

ট্রান্সপোর্ট লেয়ার রিমোট হোষ্টের দুটি প্রক্রিয়ার মধ্যে peer-to-peer এবং end-to-end যোগাযোগ বজায় রাখে। ট্রান্সপোর্ট লেয়ার ঊর্ধ্বতন লেয়ার থেকে ডাটা সংগ্রহ করে তাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সেগমেন্টে বিভক্ত করে এবং নেটওয়ার্ক লেয়ারে ডেলিভারির জন্য সরবরাহ করে।

 

কার্যাবলী

  • ট্রান্সপোর্ট লেয়ার প্রথম লেয়ার যা ঊর্ধ্বতন লেয়ার থেকে ডাটা সংগ্রহ করে তাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সেগমেন্টে বিভক্ত করে এবং নেটওয়ার্ক লেয়ারে ডেলিভারির জন্য সরবরাহ করে।এটি সেগমেন্টের প্রতিটি বাইটের হিসাব রাখে।
  • এই লেয়ার নিশ্চিত করে প্রেরণকৃত ডাটা সঠিক জায়গায় পৌঁছেছে।
  • বিভিন্ন হোষ্টের মধ্যে ডাটার এন্ডটু এন্ড ডেলিভারি নিশ্চিত করে যা একই সাবনেটে থাকতে পারে আবার নাও পারে।
  • সার্ভারের সকল প্রক্রিয়া যা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যোগাযোগ করবে তারা TSAPs দ্বারা সজ্জিত হবে, এদের পোর্ট নাম্বারও বলা হয়।

 

ইন্ড টু ইন্ড কমিউনিকেশন

রিমোট নেটওয়ার্কে যে প্রক্রিয়ায় সদৃশ হোষ্ট অনুরূপ সদৃশ হোষ্ট খুঁজে পায় সেটিকে পোর্ট নাম্বার দ্বারা চিহ্নিত করা যায়। TSAPs এক্ষেত্রে খুব উপযোগী।

ইন্ড টু ইন্ড কমিউনিকেশন

দুটি প্রধান ট্রান্সপোর্ট লেয়ার প্রটোকল হল,

  • ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রটোকল যা দুটি হোষ্টের মধ্যে নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ নিশ্চিত করে,
  • ইউজার ডাটাগ্রাম প্রটোকল যা দুটি হোষ্টের মধ্যে অনির্ভরযোগ্য যোগাযোগ নিশ্চিত করে।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : নেটওয়ার্ক লেয়ার প্রটোকল (DCN – Network Layer Protocols)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

সব কম্পিউটারেরই একটি আইপি এড্রেস থাকে যার মাধ্যমে স্বতন্ত্রভাবে শনাক্ত করা যায়। আইপি এড্রেস লেয়ার-৩(নেটওয়ার্ক লেয়ার) লজিকাল এড্রেস। প্রতিবার কম্পিউটার রিস্টার্ট করার সময় এই আইপি এড্রেস পরিবর্তিত হতে পারে।

 

এড্রেস রেসোলিউশন প্রটোকল

যোগাযোগের সময় হোষ্টের অভীষ্ট মেশিনের লেয়ার-২(এমএকে ) এড্রেস প্রয়োজন হয়, এমএকে এড্রেসকে বস্তুগতভাবে মেশিনের নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ডে ঢুকিয়ে রাখা হয় যা অপরিবর্তনীয়।

 

অন্যদিকে পাবলিক ডোমেইনের আইপি এড্রেস কদাচিৎ পরিবর্তিত হয়। কোনও ক্রুটির কারণে নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড পরিবর্তন করতে হলে এমএকে এড্রেসও পরিবর্তিত হয়। একারনেই লেয়ার-২ যোগাযোগের জন্য দুই প্রান্তের ম্যাপিং প্রয়োজন হয়। ব্রডকাস্ট ডোমেইনের কোনও রিমোট হোষ্টের এমএকে এড্রেস জানার জন্য এআরপি ব্রডকাস্ট ম্যাসেজ পাঠানো হয়, আইপি এড্রেস জানতে চেয়ে। যেহেতু এটি সম্প্রচার, তাই নেটওয়ার্কের ব্রডকাস্ট ডোমেইনে থাকা সব হোষ্ট এই ডাটা প্যাকেট পায় ও প্রক্রিয়া করে।

এড্রেস রেসোলিউশন প্রটোকল

হোষ্ট একবার এমএকে এড্রেস পেয়ে গেলে এটি লেয়ার-২ লিঙ্ক প্রটোকল ব্যবহার করে রিমোট হোষ্টের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এই এমএকে টু আইপি ম্যাপিংকে প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী উভয় হোষ্টের এআরপি ক্যাচি(ARP cache)তে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীতে যদি তাদের যোগাযোগ করার প্রয়োজন হয় তবে তারা সরাসরি তাদের এআরপি ক্যাচি রেফার করতে পারবে।

 

রিভার্স এআরপি একধরনের কৌশল যেখানে হোষ্ট, রিমোট হোষ্টের এমএকে এড্রেস জানে কিন্তু যোগাযোগের জন্য তাকে আইপি এড্রেসও জানতে হবে।

 

ইন্টারনেট কন্ট্রোল ম্যাসেজ প্রটোকল বা আইসিএমপি

আইসিএমপি নেটওয়ার্ক নিরীক্ষণ ও এরর কন্ট্রোল প্রটোকল।

 

ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন ৪(Pv4)

টিসিপি/আইপি হোষ্ট এড্রেসিং কৌশলে ব্যবহৃত ৩২ বিট এড্রেসিং স্কিম হল ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন ৪(IPv4)। এটি পর্যায়ক্রমিক এড্রেসিং স্কিম ব্যবহার করে। আইপি এড্রেস বহু রকম হতে পারে,

 

  • ক্লাস এঃ নেটওয়ার্ক এড্রেসের জন্য প্রথম অকটেট ও হোষ্ট এড্রেসের জন্য শেষ তিন অকটেট,
  • ক্লাস বিঃ নেটওয়ার্ক এড্রেসের জন্য প্রথম দুই অকটেট ও হোষ্ট এড্রেসের জন্য শেষ দুই অকটেট,
  • ক্লাস সিঃ নেটওয়ার্ক এড্রেসের জন্য প্রথম তিন অকটেট ও হোষ্ট এড্রেসের জন্য শেষ অকটেট,
  • ক্লাস ডিঃ উপরে উল্লিখিত প্রকরণের পর্যায়ক্রমিক বিন্যাসের পরিবর্তে ফ্ল্যাট আইপি এড্রেসিং স্কিম
  • ব্যবহার করে।
  • ক্লাস ইঃ এটিকে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়।

 

যদিও আইপি তেমন নির্ভরযোগ্য নয়, এটি সরবরাহের সেরা প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে।

 

ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন ৬(IPv6)

ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন ৪ এর পরবর্তী প্রজন্মের ভার্সন হল ইন্টারনেট প্রটোকল ভার্সন ৬(IPv6), এটি এনিকাস্ট এড্রেসিং উদ্ভাবন করলেও সম্প্রচারের ধারণা দূর করেছে। এতে নতুন সংযোজিত কিছু ট্রানজিশন মেকানিজম আছে,

  • ডুয়েল স্টাক ইমপ্লিমেন্টেশন,
  • টানেলিং,
  • এনএটি-পিটি

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ইন্টারনেটওয়ার্কিং (DCN – Internetworking)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

বাস্তব জগতে এক প্রশাসনের অধীনে থাকা নেটওয়ার্কগুলো ভৌগলিকভাবে ছড়ানো। সেখানে এক রকম বা ভিন্ন এক বা একাধিক নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার প্রয়োজন হতে পারে। দুটি নেটওয়ার্কের মধ্যে রাউটিং এর প্রক্রিয়াকে ইন্টারনেটওয়ার্কিং বলে। প্রটোকল, টপোলজি, লেয়ার-২ নেটওয়ার্কিং ও এড্রেসিং স্কিমের তারতম্যের জন্য নেটওয়ার্কগুলোকে ভিন্ন ধরা হয়।

ইন্টারনেটওয়ার্কিং

ইন্টারনেটওয়ার্কিংএ রাউটারগুলো পরস্পরের এড্রেস ও অন্যান্য এড্রেস জানে। তারা স্ট্যাটিকভাবে কনফিগারড হতে পারে আবার ইন্টারনেটওয়ার্কিং রাউটিং প্রটোকলের মাধ্যমেও জেনে নিতে পারে। কোনও সংস্থা বা প্রশাসনের অধীনে যেসব রাউটিং প্রটোকল তাদেরকে ইন্টেরিয়র গেটওয়ে প্রটোকল বা আইজিপি বলে। বিভিন্ন সংস্থা বা প্রশাসনের মধ্যে যেসব রাউটিং তারা এক্সটেরিয়র গেটওয়ে প্রটোকল বা ইজিপি ব্যবহার করে।

 

টানেলিং

ভৌগলিকভাবে পৃথক এমন দুটি নেটওয়ার্ক যদি পরস্পরের সাথে যুক্ত হতে চায় তাহলে তাদের ডাটা মধ্যবর্তী কোনও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্থানান্তর করতে হবে। টানেলিং হল সেই যন্ত্রকৌশল যার দ্বারা মধ্যবর্তী সেই নেটওয়ার্কের জটিলতা এড়ানো যায়। দুই প্রান্তেই টানেলিং করা হয়, ডাটা টানেলের এক প্রান্তে ঢুকে ট্যাগড হয়, সেই ট্যাগড ডাটা মধ্যবর্তী নেটওয়ার্কের ভেতর দিয়ে অন্য প্রান্তে যায়, এর ট্যাগ সরিয়ে নেটওয়ার্কের অন্য প্রান্তে পৌঁছে দেয়া হয়।

টানেলিং

 

প্যাকেট ফ্রাগমেন্টেশন

বেশিরভাগ ইথারনেট সেগমেন্টের ম্যাক্সিমাম ট্রান্সমিশন ইউনিট(এমটিইউ) ১৫০০ বাইটে সীমাবদ্ধ রাখা থাকে। এপ্লিকেশনের উপর ভিত্তি করে ডাটা প্যাকেট এরচেয়ে কম বা বেশি প্যাকেট লেন্থ পেতে পারে। ট্রানজিট পাথের যন্ত্রপাতির হার্ডওয়ার ও সফটওয়ারের সক্ষমতার উপরও নির্ভর করে সেই যন্ত্র কতটা ডাটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বা কত বড় প্যাকেট প্রক্রিয়াজাত করতে পারবে।

ট্রানজিট নেটওয়ার্কের ধারণক্ষমতার চেয়ে ছোট প্যাকেট হলে এটিকে স্বাভাবিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা যাবে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বড় প্যাকেট হলে এটিকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে প্রেরণ করতে হবে। এই প্রক্রিয়াকে প্যাকেট ফ্রাগমেন্টেশন বলে।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : নেটওয়ার্ক রাউটিং (DCN – Network Layer Routing)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

যখন কোনও ডিভাইসের লক্ষ্যে পৌছার জন্য একাধিক রাস্তা(পাথ) থাকে তখন সেটি যেকোনো একটিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে রাউটিং বলে। রাউটার নামক বিশেষ নেটওয়ার্কিং যন্ত্র অথবা সফটওয়ারগত পন্থায় এটি করা হয়। সফটওয়ার ভিত্তিক রাউটারের ফাংশনালিটি ও সুযোগ সীমাবদ্ধ।

রাউটার সবসময় ডিফল্ট রাউটারের মাধ্যমে কনফিগার করা হয়। নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য একাধিক পাথ থাকলে রাউটার নিচের বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়।

  • হপ কাউন্ট
  • ব্যান্ডউইথ
  • মেট্রিক
  • প্রিফিক্স লেন্থ
  • ডিলে

রাউটগুলো স্ট্যাটিকালি কনফিগারড হতে পারে। এক রাউট অন্য রাউটের চেয়ে বেশি কাঙ্খিতরূপে কনফিগারড হতে পারে।

 

ইউনিকাস্ট রাউটিং

ইন্টারনেট ও ইন্ট্রানেটের বেশিরভাগ ট্র্যাফিক ইউনিকাস্ট ডাটা বা ইউনিকাস্ট ট্র্যাফিক নামে পরিচিত। ইউনিকাস্ট ডাটা রাউটিং করা হলে তাকে ইউনিকাস্ট রাউটিং বলে।

ইউনিকাস্ট রাউটিং

 

ব্রডকাস্ট রাউটিং

বাই ডিফল্ট ব্রডকাস্ট প্যাকেটগুলো রাউটেড নয়, যেকোনো নেটওয়ার্কে রাউটার দ্বারা ফরোয়ার্ড করা হয়। রাউটার ব্রডকাস্ট ডোমেইন সৃষ্টি করে।

ব্রডকাস্ট রাউটিং দুই ভাবে হয়ে থাকে,

  • একটি রাউটার ডাটা প্যাকেট তৈরি করে এবং একটি একটি করে হোষ্টে প্রেরণ করে।
  • যখন রাউটার সম্প্রচারের জন্য প্যাকেট গ্রহণ করে তখন এটি ইন্টারফেস থেকে প্যাকেট প্লাবিত করে ফেলে।

ব্রডকাস্ট রাউটিং

 

মাল্টিকাস্ট রাউটিং

মাল্টিকাস্ট রাউটিং ব্রডকাস্ট রাউটিংএর বিশেষায়িত রূপ, মাল্টিকাস্ট রাউটিংএ ডাটা কেবলমাত্র নডে প্রেরণ করা হয় যা প্যাকেট গ্রহণ করতে চায়। রাউটারকে জানতে হয় নড আছে কিনা এবং ফরোয়ার্ড করার জন্য মাল্টিকাস্ট প্যাকেট গ্রহণ করবে কিনা।

মাল্টিকাস্ট রাউটিং

 

এনিকাস্ট রাউটিং

এনিকাস্ট প্যাকেট ফরোয়ার্ডিং একধরণের কৌশল যাতে মাল্টিপল হোষ্টের একই লজিকাল এড্রেস থাকতে পারে। যখন কোনও লজিকাল এড্রেসের দ্বারা গ্রহনের জন্য প্যাকেট প্রস্তুত থাকে তখন এর রাউটিং টপোলজির সবচেয়ে কাছের হোষ্টে এটি প্রেরণ করা হয়।

এনিকাস্ট রাউটিং

 

ইউনিকাস্ট রাউটিং প্রটোকল

ইউনিকাস্ট প্যাকেট রাউটিং করার জন্য দুই ধরণের রাউটিং প্রটোকল পাওয়া যায়,

  • ডিস্টেনস ভেক্টর রাউটিং প্রটোকল এবং
  • লিঙ্ক স্টেট রাউটিং প্রটোকল

 

মাল্টিকাস্ট রাউটিং প্রটোকল

মাল্টিকাস্ট রাউটিং প্রটোকল একধরনের অপটিমাল ট্রি ব্যবহার করে রাউটিং এর জন্য,

  • DVMRP – ডিস্টেনস ভেক্টর মাল্টিকাস্ট রাউটিং প্রটোকল
  • MOSPF – মাল্টিকাস্ট ওপেন সর্টেস্ট পাথ ফার্স্ট
  • CBT – কোর বেসড ট্রি
  • PIM – প্রটোকল ইন্ডিপেন্ডেন্ট মাল্টিকাস্ট

 

প্রটোকল ইন্ডিপেন্ডেন্ট মাল্টিকাস্ট বর্তমানে বেশি ব্যবহৃত হয়, এর দুটি প্রকরণ দেখা যায়,

  • পিআইএম ডেনস মোড
  • পিআইএম স্পারস মোড

 

ফ্লাডিং ও সর্টেস্ট পাথ রাউটিংএর এল্গারিদম,

কমন সর্টেস্ট পাথ এল্গারিদম হল,

  • Dijkstra’s algorithm
  • Bellman Ford algorithm
  • Floyd Warshall algorithm

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : নেটওয়ার্ক এড্রেসিং (DCN – Network Addressing)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

নেটওয়ার্ক লেয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি হল লেয়ার-৩ নেটওয়ার্ক এড্রেসিং, এরা সবসময়ই লজিকাল। এরা সফটওয়ার ভিত্তিক এড্রেস যা সঠিক কনফিগারেশনের মাধ্যমে পরিবর্তনীয়। নেটওয়ার্ক এড্রেস সবসময় হোষ্ট, নড বা সার্ভার নির্দেশ করে অথবা এরা সম্পূর্ণ একটি নেটওয়ার্কই তুলে ধরে। বিভিন্ন ধরণের নেটওয়ার্ক এড্রেস আছে তাদের মধ্যে প্রধান প্রধান হল,

  • আইপি,
  • আইপিএক্স,
  • অ্যাপলটক

নেটওয়ার্ক এড্রেসিং

যেহেতু বর্তমান যুগে কেবল আইপি কার্যকর আছে তাই আমরা সেটি নিয়েই আলোচনা করব। আইপি এড্রেসিং হোষ্ট ও নেটওয়ার্কের মধ্যে কৌশল সৃষ্টি করে, যেহেতু আইপি এড্রেসিং ক্রমানুসারে সজ্জিত তাই হোষ্ট সবসময় কোনও নেটওয়ার্কের আওতার মধ্যে থাকে। সাবনেটের আওতার বাইরের হোষ্টদের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে ডেসটিনেশন নেটওয়ার্ক এড্রেস জানা থাকতে হয়। বিভিন্ন সাবনেটের আওতাভুক্ত হোষ্টদের নিজেদের খুঁজে বের করতে কৌশলের আশ্রয় নিতে হয়, এটি ডিএনএসের মাধ্যমে করা হয়। ডিএনএস একরকমের সার্ভার যা রিমোট হোষ্টের লেয়ার-৩ এড্রেস এর ডোমেইন নামের সাথে উপস্থাপন করে। যখন কোনও হোষ্ট এর লেয়ার-৩ এড্রেস বা আইপি এড্রেস পেয়ে যায় তখন এটি এর রাউটার নামক গেটওয়েতে সব ডাটা প্যাকেট প্রেরণ করে। রাউটার রাউটিং টেবিলের সাহায্য নেয়, যেটিতে নেটওয়ার্কে পৌছার পদ্ধতি সম্পর্কে তথ্য থাকে।

 

নেটওয়ার্ক এড্রেস নিচের যেকোনো একরকমের হতে পারে,

  • ইউনিকাস্ট(এক হোষ্টের জন্য নির্ধারিত)
  • মাল্টিকাস্ট(গ্রুপের জন্য নির্ধারিত)
  • ব্রডকাস্ট(সবার জন্য নির্ধারিত)
  • এনিকাস্ট(নিকটতম হোষ্টের জন্য নির্ধারিত)

 

রাউটার বাই ডিফল্ট কখনো ব্রডকাস্ট ট্রাফিককে ফরোয়ার্ড করে না।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : নেটওয়ার্ক লেয়ার : ভূমিকা (DCN – Network Layer Introduction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ওএসআই মডেলের লেয়ার-৩ কে নেটওয়ার্ক লেয়ার বলা হয়, নেটওয়ার্ক লেয়ার হোষ্ট ও নেটওয়ার্ক এড্রেসিং সংক্রান্ত বিষয়, সাবনেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা ও ইন্টারনেটওয়ার্কিং নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সাবনেটের আওতায় বা বাইরে সোর্স থেকে লক্ষ্যে প্যাকেট পৌঁছে দেয়া নেটওয়ার্ক লেয়ারের দায়িত্ব। দুটি ভিন্ন সাবনেটের ভিন্ন এড্রেসিং স্কিম বা অসম্পৃক্ত এড্রেসিং টাইপ থেকে থাকতে পারে। প্রটোকলের ক্ষেত্রেও একই রকম, দুটি ভিন্ন সাবনেট ভিন্ন প্রটোকলের ক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল থাকতে পারে। এড্রেসিং স্কিম ও প্রটোকল নিয়ন্ত্রণ করে সোর্স থেকে লক্ষ্যে প্যাকেট পৌঁছে দেয়া নেটওয়ার্ক লেয়ারের দায়িত্ব।

 

লেয়ার-৩ ফাংশনালিটি

নেটওয়ার্ক লেয়ারের কাজ করে এমন যন্ত্রপাতির প্রধান কাজ থাকে রাওটিং। রাওটিং একক কোনও লক্ষ্য অর্জনের জন্য একাধিক কাজের সমন্বয় হতে পারে।যেমন,

  • ডিভাইস এবং নেটওয়ার্কিং এড্রেসিং,
  • রাওটিং টেবিল ও স্ট্যাটিক রাওটিং পূর্ণ করা,
  • ইনকামিং ও আউটগোয়িং ডাটা সাজানো ও সার্ভিসের উপযোগিতা বিশ্লেষণ করে প্যাকেটের সেট অনুসারে ফরোয়ার্ড করা,
  • দুটি ভিন্ন সাবনেটের মধ্যে ইন্টারনেটওয়ার্কিং করা,
  • লক্ষ্যে প্যাকেট পৌঁছে দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা,
  • সংযোগসহ ও সংযোগবিহীন যন্ত্রকৌশল গঠনের চেষ্টা করা

 

 

নেটওয়ার্ক লেয়ারের বৈশিষ্ট্য

আদর্শ ফাংশনালিটি অর্জিত হলে লেয়ার-৩ যেধরনের সুবিধা দিতে পারে সেগুলো হল,

  • সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের মান,
  • ভারসাম্য ও লিঙ্ক ব্যবস্থাপনা,
  • নিরাপত্তা,
  • বিভিন্ন স্কিমের সাবনেট ও প্রটোকলের সমন্বয় সাধন,
  • ফিজিকাল নেটওয়ার্ক ডিজাইনকে ভিত্তি করে বিভিন্ন লজিকাল নেটওয়ার্ক ডিজাইন,
  • L3 VPN ও টানেল এন্ডটু এন্ড কানেক্টিভিটির ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে পারে।

 

ইন্টারনেট প্রটোকল নেটওয়ার্ক লেয়ার প্রটোকল হিসেবে এন্ডটু এন্ড ডিভাইসের যোগাযোগের জন্য প্রসিদ্ধ। এটি IPv4 ও IPv6 দুটি প্রকরণে পাওয়া যায়। IPv4 বহুদিন রাজত্ব করার পর একে প্রতিস্থাপিত করতে IPv6 আনা হয়েছে IPv4 এর ক্রুটিগুলো সরিয়ে দিতে।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ডাটা লিঙ্ক কন্ট্রোল এবং প্রটোকল (DCN – Data-link Control & Protocols)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

যখন একক মাধ্যমে কোনও ডাটা ফ্রেম(লেয়ার-২ ডাটা) এক হোষ্ট থেকে অন্য হোষ্টে প্রেরণ করা হয় তখন প্রেরণকারী ও গ্রহণকারীর গতি সমান হতে হয়। গতি কোনও কারণে ভিন্ন হলে ডাটা হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই গতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুই ধরণের ব্যবস্থা করা যায়,

  • থামা এবং আবার শুরু করাঃ এই নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রয়োজনে প্রেরণকারীকে থামিয়ে রাখে সেই পর্যন্ত যতক্ষণ গ্রহণকারীর কাছ থেকে ডাটা ফ্রেম পৌঁছানো নিশ্চিত না হয়।

থামা এবং আবার শুরু করা

  • স্লাইডিং উইন্ডোঃ এই নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে প্রেরণকারী ও গ্রহণকারীর দ্বারা নির্ধারিত সংখ্যক ডাটা ফ্রেম পৌঁছানো নিশ্চিত হলেই কেবল প্রক্রিয়া নিশ্চিতকরণ সম্পন্ন হয়।

 

 

ভুল নিয়ন্ত্রণ

ডাটা ফ্রেম ট্রান্সমিশনের সময় এটি ট্রানজিটে হারিয়ে যেতে পারে, করাপ্টেড অবস্থায় গৃহীত হতে পারে। এজন্য প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী উভয়কে কিছু প্রটোকল দেয়া থাকে যার মাধ্যমে ডাটা ফ্রেমের হারিয়ে যাওয়া বা ‘মিস হওয়া’ জাতীয় ট্রানজিট এরর নির্ণয় করা যায়। সেক্ষেত্রে  প্রেরণকারী আবার ডাটা প্রেরণ করে এবং গ্রহণকারী আবার প্রেরণের জন্য গ্রহণকারীকে অনুরোধ জানায়। এরর কন্ট্রোল ব্যবস্থার রিকোয়ারমেন্টগুলো হল,

  • ভুল নির্ণয় বা খুঁজে বের করা,
  • ইতিবাচক এসিকে,
  • নেতিবাচক এসিকে,
  • রিট্রান্সমিশন

 

অটোম্যাটিক রিপিট রিকোয়েস্ট বা এআরকিউ ব্যবহার করে ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের মাধ্যমে ভুল নিয়ন্ত্রণের কৌশল তিনটি,

 

স্টপ এন্ড ওয়েট এআরকিউ

স্টপ এন্ড ওয়েট এআরকিউ

এই পদ্ধতিতে যে বিষয়গুলো হতে পারে তা হল,

  • প্রেরণকারী টাইমআউট কাউন্টার ব্যবহার করে,
  • যখন একটি ফ্রেম প্রেরণ করা হয়ে যায় তখন থেকে প্রেরণকারী টাইমআউট কাউন্টারে গননা শুরু করে,
  • একটি ফ্রেম প্রেরণের খবর আসলে প্রেরণকারী সারিবদ্ধভাবে পরবর্তী ফ্রেম প্রেরণ করে,
  • ফ্রেম প্রেরণের খবর না আসলে প্রেরণকারী ধরে নেয় হয় ফ্রেম অথবা তার খবর ট্রানজিটে হারিয়ে গেছে। তখন প্রেরণকারী আবার ফ্রেম প্রেরণ করে টাইমআউট কাউন্টারে গননা শুরু করে,
  • নেতিবাচক খবর আসলে প্রেরণকারী আবার সেই ফ্রেম প্রেরণ করে

 

গো ব্যাক এন এআরকিউ

স্টপ এন্ড ওয়েট এআরকিউ তাদের রিসোর্সের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে না, গো ব্যাক এন এআরকিউ পদ্ধতিতে প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ই একটি উইন্ডো বজায় রাখে। প্রেরক উইন্ডোর আকার প্রেরণকারীকে একাধিক ফ্রেম প্রেরণের সুযোগ করে দেয়, আগে প্রেরণকৃত ফ্রেমের কোনও নিশ্চিতকরণ সংবাদ ছাড়াই। গ্রহণকারী উইন্ডো গ্রহণকারীকে একাধিক ফ্রেম গ্রহণের ও সেই সংবাদ নিশ্চিত করার সুযোগ করে দেয়।

গো ব্যাক এন এআরকিউ

সিলেক্টিভ রিপিট এআরকিউ

সিলেক্টিভ রিপিট এআরকিউ প্রক্রিয়ায় প্রেরণকারী কেবল এনএসিকে সম্পন্ন প্যাকেট প্রেরণ করে।

সিলেক্টিভ রিপিট এআরকিউ

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ক্রুটি নির্ণয় ও সংশোধন (DCN – Error Detection & Correction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ডাটা ট্রান্সমিশনের সময় নয়েজ, ক্রসটকসহ আরও অনেক কারণে ডাটা ক্রুটিযুক্ত হতে পারে।উঁচুশ্রেণীর লেয়ারগুলো নেটওয়ার্ক স্থাপত্যকাঠামোর সরলীকরণের মাধ্যমে কাজ করে বলে হার্ডওয়ারের ডাটা প্রসেসিং সম্পর্কে খুব বেশি অবগত নয়। তারপরও পারে।উঁচুশ্রেণীর লেয়ারগুলো নির্ভুল ট্রান্সমিশন প্রত্যাশা করে। খুব বেশি হার্ডওয়ার ক্রুটিপূর্ণ ডাটার জন্য সেই প্রত্যাশামত কাজ করতে পারেনা।ভয়েজ বা ভিডিও টাইপের এপ্লিকেশন টুকটাক ক্রুটি নিয়েও চলতে পারে।

 

ডাটা লিঙ্ক লেয়ার ক্রুটি নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু কৌশল ব্যবহার করে,যাতে করে ফ্রেম(ডাটা বিট স্ট্রিম) নির্ভুলতার একটি নির্দিষ্ট মান বজায় রাখতে পারে।

 

ক্রুটির প্রকরণগুলো হল

তিন ধরণের ক্রুটি দেখা যায়,

  • সিঙ্গেল বিট এররঃ

সিঙ্গেল বিট এরর

একটি ফ্রেমে কেবল একটি বিটে ক্রুটি,

  • মাল্টিপল বিট এররঃ

মাল্টিপল বিট এরর

ফ্রেম একের বেশি এমন বিট গ্রহণ করে যা ক্রুটিপূর্ণ,

  • বড় ক্রুটিঃ

বড় ক্রুটি

একের বেশি ক্রমিক বিট ক্রুটিপূর্ণ

 

এরর কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্ট দুটি পদ্ধতিতে কাজ করে, ক্রুটি নির্ণয় ও ক্রুটি সংশোধন ।

 

ক্রুটি নির্ণয়

রিসিভড ফ্রেমের ক্রুটি নির্ণয় প্যারীটি চেক ও সাইক্লিক রেডানড্যান্সি চেক বা সিআরসি দ্বারা করা হয়। উভয় ক্ষেত্রেই মূল ডাটার সাথে কিছু অতিরিক্ত ডাটা প্রেরণ করা হয়। গ্রহীতা যন্ত্র সেই ডাটা সঠিকভাবে গ্রহণ না করলে বোঝা যায় সিস্টেম ক্রুটিমুক্ত নয়।

 

প্যারীটি চেক

মূল ডাটার সাথে এক বিট অতিরিক্ত ডাটা প্রেরণ করা হয়।তার থেকে অড প্যারীটি বা ইভেন হলে ইভেন প্যারীটি নির্ণয় করে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রুটি নির্ণয় করা হয়।

প্যারীটি চেক

 

সাইক্লিক রেডানড্যান্সি চেক বা সিআরসি

এ প্রক্রিয়ায় ভিন্নভাবে ক্রুটি নির্ণয় করা হয়।প্রেরণকৃত ডাটার বাইনারি ডিভিশনের মাধ্যমে এটি করা হয়।

সাইক্লিক রেডানড্যান্সি চেক বা সিআরসি

 

ক্রুটি সংশোধন

ডিজিটাল জগতে দুইভাবে ক্রুটি সংশোধন করা হয়,

  • ব্যাকওয়ার্ড এরর কারেকশনঃ রিসিভার গৃহীত ডাটায় ক্রুটি পেলে প্রেরককে পুনরায় ডাটা ট্রান্সমিশনের অনুরোধ জানায়,
  • ফরোয়ার্ড এরর কারেকশনঃ রিসিভার গৃহীত ডাটায় ক্রুটি পেলে ভুল সংশোধন কোড ব্যবহার করে ক্রুটি সারায়।

 

প্রথমটি অপেক্ষাকৃত সহজ, যদি পুনরায় ডাটা ট্রান্সমিশনের খরচ কম হয়। ডাটা ফ্রেমে সংশোধনের ক্ষেত্রে রিসিভারকে জানতে হবে ফ্রেমের কোন বিট ক্রুটিপূর্ণ।