ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ফিজিকাল লেয়ার : ভূমিকা (DCN – Physical Layer Introduction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ওএসআই মডেলে ফিজিকাল লেয়ার মূল হার্ডওয়ার ও সিগনালিং কৌশলের সমন্বয় সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, ওএসআই মডেলে ফিজিকাল লেয়ারই একমাত্র লেয়ার যেটি দুটি ভিন্ন ষ্টেশনের বস্তুগত যোগাযোগ নিয়ে কাজ করে। এই লেয়ার হার্ডওয়ার ইকুইপমেন্ট, ক্যাবলিং, ওয়ারিং এবং বাইনারি সিগন্যাল প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পালস ও ফ্রিকোয়েন্সি বিবৃত করে।

ফিজিকাল লেয়ার এর সার্ভিসকে ডাটা লিঙ্ক লেয়ারে অর্পণ করে। ডাটা লিঙ্ক লেয়ার ফিজিকাল লেয়ারে ফ্রেম প্রদান করে। ফিজিকাল লেয়ার সেগুলোকে ইলেক্ট্রিক্যাল পালসে পরিণত করে, যা বাইনারি ডাটারূপে প্রতীয়মান হয়। সেই বাইনারি ডাটা তারবিহীন বা তারযুক্ত মাধ্যমে প্রেরিত হয়।

 

সিগন্যাল

ফিজিকাল মাধ্যমে ডাটা যখন প্রেরিত হয়, সেটিকে প্রথমে তাড়িতচৌম্বক সিগন্যালে রূপান্তরিত করে নেয়া হয়। ডাটা নিজে এনালগ(যেমন মানবকণ্ঠ) বা ডিজিটাল(কোনও ডিস্কে একটি ফাইল)হতে পারে, যেকোনো এনালগ বা ডিজিটাল উভয় প্রকার ডাটাকে এনালগ বা ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তরিত করে নেয়া সম্ভব।

  • ডিজিটাল সিগন্যালঃ ডিজিটাল সিগন্যাল প্রকৃতিগতভাবে পৃথক বা অসংলগ্ন, এরা ভোল্টেজ পালসের ক্রম প্রকাশ করে। কম্পিউটার সিস্টেমের সার্কিটসংক্রান্ত অংশে ডিজিটাল সিগন্যাল ব্যবহৃত হয়।
  • এনালগ সিগন্যালঃ এনালগ সিগন্যাল স্বাভাবিকভাবে পাওয়া ক্রমাগত সিগন্যাল, যা ক্রমাগত আসা তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ দ্বারা প্রকাশিত।

 

ট্রান্সমিশনে বিঘ্ন

সিগন্যালগুলো যখন মাধ্যমগুলোর ভেতর দিয়ে ভ্রমণ করে, অনেক সময় সেখানে বিঘ্ন ঘটতে পারে, এর প্রধান প্রধান কারণগুলো হল,

  • ডাটা অপচয়
  • বিচ্ছুরণ
  • বিলম্ব সংক্রান্ত বিকৃতি
  • নয়েজ

 

নয়েজঃ এনালগ বা ডিজিটাল সিগন্যালে নিয়মিত বিঘ্ন বা অস্থিরতাকে সিগন্যালের নয়েজ বলে। এটি মূল ডাটাকে বিকৃত করে। নয়েজ নিচের যেকোনো রকমের হতে পারে,

  • থারমাল নয়েজ
  • ইন্টারমডুলেশন
  • ক্রসটক
  • ইম্পালস

 

রান্সমিশন মিডিয়া

দুটি কম্পিউটার ব্যবস্থার তথ্য যে মাধ্যমের ভেতর দিয়ে প্রেরিত হয় তাকে ট্রান্সমিশন মিডিয়া বলে, এটি দুই ধরণের হতে পারে,

  • গাইডেড মিডিয়াঃ সকল তারজাতীয় মিডিয়া গাইডেড মিডিয়া, যেমন ইউটিপি, কোএক্সিয়াল ক্যাবল এবং ফাইবার অপটিক্স। এই মিডিয়ায় প্রেরক এবং গ্রহীতা সরাসরি যুক্ত থাকে।
  • আনগাইডেড মিডিয়াঃ তারবিহীন বা বেতার মিডিয়াকে আনগাইডেড মিডিয়া বলে ধরা হয়।

 

চ্যানেল ক্যাপাসিটি

ডাটা ট্রান্সমিশনের গতিকে চ্যানেল ক্যাপাসিটি বলা হয়। এটি বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে,

  • ব্যান্ডউইথ
  • এরর রেট
  • এনকোডিং

 

মাল্টিপ্লেক্সিং

একক মাধ্যমে মাল্টিপল ডাটা স্ট্রিম মেশানো এবং প্রেরণের কৌশলকে মাল্টিপ্লেক্সিং বলে।

 

সুইচিং

এর মাধ্যমে ডাটাকে উৎস থেকে এমন গন্তব্যে প্রেরণ করা হয় যা সরাসরি সংযুক্ত নয়।

 

সুইচিং

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি (DCN – Computer Network Security)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ইন্টারনেটের প্রারম্ভিক সময়গুলোতে এর ব্যবহার কেবল সামরিক ক্ষেত্রে ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উন্নয়ন ও গবেষণাকর্মের মাঝে সীমিত ছিল। পরে যখন সব নেটওয়ার্ক মিলে ইন্টারনেট সৃষ্টি হল, তখন তথ্যব্যবস্থা জনগনের জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেল। অতি স্পর্শকাতর তথ্য ও উপাত্ত, মানুষের ব্যাংক ও বাজারসদাই, নাম-পাসওয়ার্ড, ব্যক্তিগত বিষয়আশয় এগুলি সবকিছু নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পরে গেল। সকল নিরাপত্তা ঝুঁকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এদেরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়,

  • ইন্টারাপশনঃ কোনও সাইটে ঢুকতে না পারা বা এজাতীয় সমস্যা।
  • গোপনীয়তা লঙ্ঘনঃ কারো ব্যক্তিগত সীমায় প্রবেশ বা তার বিনা অনুমতিতে বা অগোচরে তথ্য গ্রহণ,
  • ইন্টেগ্রিটিঃ ডাটা সংশোধন বা প্রকৃত অধিকার আছে এমন ব্যক্তির সমন্বয়ে সিস্টেমে বিচরণ সংশ্লিষ্ট বিষয়,
  • অথেনটিসিটিঃ যখন আক্রমণকারী ব্যক্তি হিসেবে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে এবং অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি

বর্তমান বিশ্বের কোনও ব্যবস্থাই শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, কিন্তু ডাটা যখন অনিয়ন্ত্রিত নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেটে প্রবাহিত হয় তখন তার নিরাপত্তার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া যায়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা পদ্ধতি হল ক্রিপ্টোগ্রাফি ।

ক্রিপ্টোগ্রাফি হল এক ধরণের কৌশল যাতে সরল টেক্সট ডাটাকে এনক্রিপ্ট করা হয় যাতে ডাটা বোঝা ও ব্যাখ্যা করা কঠিন হয়। ক্রিপ্টোগ্রাফির বেশ কিছু এলগরিদম বর্তমানে পাওয়া যায়,

  • সিক্রেট কী
  • পাবলিক কী
  • ম্যাসেজ ডাইজেস্ট

 

সিক্রেট কী এনক্রিপশন

প্রেরক ও গ্রাহকের কাছে গোপন সূত্র(কী) থাকে।

পাবলিক কী এনক্রিপশনঃ এই এনক্রিপশন ব্যবস্থায় সব ইউজারের কাছে গোপন সূত্র(কী) থাকে। শেয়ারড ডোমেইনে এটি সম্ভব নয়।

 

ম্যাসেজ ডাইজেস্ট

প্রকৃত তথ্য প্রেরণ করা হয় না, সাঙ্কেতিক মান প্রেরণ করা হয়। গ্রহীতার প্রান্ত থেকে সেই সাঙ্কেতিক মান অনুধাবন ও নির্ণয় করে ডাটা নির্ণয় করা হয়। এমডি-৫ হেসিং এরকম ম্যাসেজ ডাইজেস্টের উদাহরণ।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : কম্পিউটার নেটওয়ার্ক মডেল (DCN – Computer Network Models)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং একটি জটিল কাজ, যার মধ্যে আছে সফটওয়ার, ফার্মওয়ার, নিচু শ্রেণীর প্রকৌশল, হার্ডওয়ার, এবং ইলেকট্রিক কর্মকাণ্ড। এই কর্মকাণ্ডকে সহজ করার জন্য এটিকে কয়েকটি লেয়ারে ভাগ করা হয়। এই লেয়ারগুলো স্বতন্ত্র ও তাদের নিজস্ব কাজ থাকে, পুরো নেটওয়ার্কিং এই লেয়ারগুলোর উপর নির্ভর করে। লেয়ারগুলো নিজেদের মধ্যে ডাটা আদানপ্রদান করে, কেবলমাত্র ইনপুট ও আউটপুটের জন্য পরস্পরের উপর নির্ভর করে।

 

লেয়ারের কাজ

নেটওয়ার্ক মডেলের লেয়ার স্থাপত্যে একটি পুরো নেটওয়ার্ক প্রক্রিয়া অনেকগুলো ক্ষুদ্র কাজে বিভক্ত থাকে। লেয়ারের যোগাযোগ ব্যবস্থায় কোনও হোষ্টের অধীনে সমগোত্রীয় লেয়ার রিমোট হোষ্টের মাধ্যমে ক্ষুদ্র কাজগুলো করতে পারে। এই কাজগুলো সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের লেয়ারের মাধ্যমে শুরু হয়। সর্বোচ্চ পর্যায়ের লেয়ারে শুরু হলে প্রক্রিয়াটি নিচের লেয়ারের দিকে ধাবিত হয়, একদম নিচের লেয়ারে কাজ শুরু হলে উলটোভাবে প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্ত হয়। প্রত্যেকটি লেয়ার কাজের খণ্ডাংশ সম্পন্ন করতে প্রক্রিয়া, প্রটোকল ও পদ্ধতির সমন্বয় করে।

লেয়ারের কাজ

 

ওএসআই মডেল

ওপেন সিস্টেম ইন্টারকানেক্ট সব কমুনিকেশন সিস্টেমের জন্য আদর্শ, আইএসও দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই মডেলের সাতটি লেয়ার আছে,

 

  • এপ্লিকেশন লেয়ারঃ এপ্লিকেশন ব্যবহারকারীকে ইন্টারফেস ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়,
  • প্রেজেন্টেশন লেয়ারঃ নেটিভ ফরম্যাটের ডাটা কীভাবে পরিবেশিত হবে তা এই লেয়ার নির্ধারণ করে,
  • সেশন লেয়ারঃ এই লেয়ার রিমোট হোষ্টের মধ্যবর্তী সেশন নিয়ন্ত্রণ করে,
  • ট্রান্সপোর্ট লেয়ারঃ হোষ্টগুলোর মাঝে বিতরণ এই লেয়ারের দায়িত্ব,
  • নেটওয়ার্ক লেয়ারঃ এসাইনমেন্ট ও নেটওয়ার্কে হোষ্টগুলোর স্বাতন্ত্র্য নির্দেশ করে,
  • ডাটা লিঙ্ক লেয়ারঃ ডাটা পড়া ও লেখা এই লেয়ারে হয়, লিঙ্ক এরর থাকলে সেটিও এই লেয়ারে সনাক্ত হয়,
  • ফিজিকাল লেয়ারঃ এই লেয়ার হার্ডওয়ার, ক্যাবল সংযোগ ও পাউয়ার আউটপুট , পালস রেট এসব নির্দেশ করে।

 

ইন্টারনেট মডেল

ইন্টারনেট টিসিপি বা আইপি প্রটোকল স্যুইট ব্যবহার করে যা ইন্টারনেট মডেলকে বিবৃত করে। এটি চারটি লেয়ারে বিভক্ত,

  • এপ্লিকেশন লেয়ারঃ এপ্লিকেশন ব্যবহারকারীকে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়, যেমন এফটিপি, এইচটিটিপি ইত্যাদি।
  • ট্রান্সপোর্ট লেয়ারঃ হোষ্টগুলোর মাঝে কীভাবে ডাটা প্রবাহিত হবে তা ঠিক করা এই লেয়ারের দায়িত্ব।
  • ইন্টারনেট লেয়ারঃ ইন্টারনেট প্রটোকল বা আইপি এই লেয়ারে কাজ করে।
  • লিঙ্ক লেয়ারঃ প্রকৃত ডাটা প্রেরণ বা গ্রহণ করার কৌশল এই লেয়ার নির্ধারণ করে।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : কম্পিউটার নেটওয়ার্ক টোপোলজি (DCN – Computer Network Toplogies)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

নেটওয়ার্ক টপোলজি হল একধরনের ব্যবস্থা যার মাধ্যমে কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক ডিভাইসগুলো পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে। ফিজিকাল ও লজিকাল উভয় দৃষ্টিভঙ্গিতেই টপোলজিকে বিবৃত করা যায়। একই নেটওয়ার্কে ফিজিকাল ও লজিকাল উভয় টপোলজি একই রকম বা ভিন্ন হতে পারে।

 

পয়েন্ট টু পয়েন্ট

পয়েন্ট টু পয়েন্ট নেটওয়ার্কে ঠিক দুটো হোষ্ট যেমন কম্পিউটার, সুইচ, রাউটার বা সার্ভার একটিমাত্র তার ব্যবহার করে সংযুক্ত থাকতে পারে, এক হোষ্টের গ্রহণকারী প্রান্ত অন্য হোষ্টের প্রেরণকারী প্রান্তের সাথে যুক্ত থাকতে পারে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভাবে দুটো হোষ্ট যুক্ত থাকলে মধ্যবর্তী অনেক ডিভাইস থাকতে পারে।

পয়েন্ট টু পয়েন্ট

 

বাস টপোলজি

বাস টপোলজির ক্ষেত্রে সব যন্ত্রগুলো একটি যোগাযোগ মাধ্যম বা তার শেয়ার করে। একই সময়ে একাধিক হোষ্ট ডাটা প্রেরণ করলে বাস টপোলজির ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। এজন্য বাস টপোলজি সিএসএমএ/সিডি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অথবা একটি হোষ্টকে বাসমাস্টার ধরে সমস্যা সমাধান করে।

বাস টপোলজি

 

স্টার টপোলজি

স্টার টপোলজিতে সকল হোষ্ট একটি কেন্দ্রীয় ডিভাইসে সংযুক্ত থাকে, যাকে হাব ডিভাইস বলে যা পয়েন্ট টু পয়েন্ট কানেকশনে যুক্ত থাকে। হাব ডিভাইসগুলো নিচের যেকোনো রকমের হতে পারে,

  • লেয়ার-১ ডিভাইস যেমন হাব বা রিপিটার
  • লেয়ার-২ ডিভাইস যেমন সুইচ বা ব্রিজ
  • লেয়ার-৩ ডিভাইস যেমন রাউটার বা গেটওয়ে

স্টার টপোলজি

স্টার টপোলজি সাশ্রয়ী এবং একে কনফিগার করাও সহজ।

 

রিং টপোলজি

রিং টপোলজি নেটওয়ার্কে একটি হোষ্ট মেশিন ঠিক দুটি অন্য মেশিনে সংযুক্ত থেকে একটি সার্কুলার নেটওয়ার্ক কাঠামো গঠন করে। যখন এক হোষ্ট এর সন্নিহিত কোনও হোষ্টে ম্যাসেজ পাঠাতে চায় তখন ডাটা মধ্যবর্তী সকল মাধ্যমিক হোষ্ট আবর্তন করে যায়। কেবলমাত্র একটি বাড়তি তার ব্যবহার করে এডমিনিস্ট্রেটর কাঠামোতে আরেকটি হোষ্ট যোগ করতে পারেন। একটা হোষ্টে ভুল হলে সমস্ত রিং তা ভোগ করে।

রিং টপোলজি

 

মেস টেকনোলজি

এক্ষেত্রে হোষ্টগুলো এক বা একাধিক হোষ্টের সাথে যুক্ত থাকতে পারে, এর হোষ্টগুলো পয়েন্ট টু পয়েন্ট কানেকশনে অন্য সবগুলো বা কিছু কিছু হোষ্টের সাথে যুক্ত থাকতে পারে। মেস টেকনোলজি দুই রকমের হতে পারে,

মেস টেকনোলজি

  • ফুল মেসঃ হোষ্টগুলো পয়েন্ট টু পয়েন্ট কানেকশনে অন্য সবগুলো হোষ্টের সাথে যুক্ত থাকে।
  • পারসিয়ালি মেসঃ হোষ্টগুলো পয়েন্ট টু পয়েন্ট কানেকশনে অন্য কয়েকটি(সবগুলোর সাথে না) হোষ্টের সাথে যুক্ত থাকে।

 

ট্রি টপোলজি

বর্তমান সময়ে ব্যবহৃত সবচেয়ে কমন নেটওয়ার্ক টপোলজি, ক্রমবিন্যাসগত টপোলজি নামেও পরিচিত।

ট্রি টপোলজি

 

ডেইজি চেইন

এই টপোলজি সবগুলো হোষ্টকে লিনিয়ার বিন্যাসে সংযুক্ত রাখে।

ডেইজি চেইন

 

হাইব্রিড টপোলজি

কয়েকটি টপোলজি সমন্বিত হয়ে কাজ করে এই নেটওয়ার্ক কাঠামো গঠন করে।

হাইব্রিড টপোলজি

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : নেটওয়ার্ক লেন টেকনোলজি (DCN – Network LAN Technologies)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

বিভিন্ন নেটওয়ার্ক লেন টেকনোলজি নিয়ে আলোচনা করা যাক,

 

ইথারনেট

লেন টেকনোলজিতে এটি বহুল প্রচলিত, ১৯৭০ সালে Bob Metcalfe এবং D.R. Boggs এটি আবিস্কার করেন। IEEE 802.3 তে ১৯৮০ সালে আদর্শ হিসেবে এটিকে গ্রহণ করা হয়।

 

ইথারনেট মিডিয়া ব্যবহার করে। শেয়ার করা মিডিয়ার ডাটা পরস্পর সংঘর্ষ প্রবণ হতে পারে। ইথারনেট সংঘর্ষ শনাক্ত করার জন্য CSMA/CD প্রযুক্তি ব্যবহার করে। সচরাচর দেখা যাওয়া ইথারনেট 10BASE-T বৈশিষ্ট্যের যার ১০ এমবিপিএস গতি, BASE দ্বারা বেসব্যান্ড, এবং টি দ্বারা Thick Ethernet বোঝায়।

 

দ্রুত ইথারনেট

দ্রুত বর্ধনশীল সফটওয়ার ও হার্ডওয়ার প্রযুক্তির উপযোগী ইথারনেট ইউটিপি, অপটিক্যাল ফাইবার ও তারবিহীন ভাবেও চলতে পারে। ১০০ এমবিপিএস গতি লাভ এর পক্ষে সম্ভব। IEEE 803.2 তে 100BASE-T নামে এটি শনাক্ত করা যায়, Cat-5 twisted pair cable ব্যবহার করে। ইথারনেট হোষ্টের মাঝে তারের মাধ্যমে মিডিয়া শেয়ার করতে CSMA/CD ব্যবহার করে, তারবিহীন উপায় CSMA/CA ব্যবহার করে। অপটিক্যাল ফাইবারে দ্রুত ইথারনেট 100BASE-FX নামে পরিচিত।

 

গিগা ইথারনেট

১৯৯৫ সালে গিগা ইথারনেটের যাত্রা শুরু, এটি 1000 mbits/second গতিসম্পন্ন EEE802.3ab সমর্থিত এই গিগা ইথারনেট at-5, Cat-5e এবং Cat-6 ক্যাবল ব্যবহার করতে পারে। IEEE802.3ah অপটিক্যাল ফাইবারে গিগা ইথারনেট বোঝায়।

 

ভার্চুয়াল লেন

লেন ইথারনেট ব্যবহার করে তখন যখন এটি শেয়ারকৃত মিডিয়া নিয়ে কাজ করে। এক্ষেত্রে একক সম্প্রচার ডোমেইন ও একক সংঘর্ষ ডোমেইন তৈরি করা হয়, একক সম্প্রচার ডোমেইন একাধিক সম্প্রচার ডোমেইনে বিভক্ত হওয়ার সমাধান হল ভার্চুয়াল লেন। ডিফল্ট হিসেবে সব হোষ্ট একক ভার্চুয়াল লেনে সংযুক্ত থাকে।

ভার্চুয়াল লেন

সফটওয়্যার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট (Software Project Management)

সৈয়দ আলী শাফিন

 

যে কোন সফটওয়্যার (বা সাধারন মানুষ যাকে বলে আই টি) কোম্পানিতে প্রধানত: দু’ধরণের কাজ হয়ে থাকে ।

  • সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং
  • সফটওয়্যার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট

আমাদের আজকের বিষয় সফটওয়্যার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট. সফটওয়্যার প্রজেক্ট বলতে আমরা বুঝি, একটি সফটওয়্যার এর প্লানিং থেকে শুরু করে, এর প্রোগ্রামিং, কোয়ালিটি পরীক্ষা, ক্লায়েন্টের কাছে বুঝিয়ে দেয়া. এর এই প্রতিটি ধাপ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে হলে প্রয়োজন যথাযথ সফটওয়্যার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ।
আর এই সফটওয়্যার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট যিনি পরিচালনা করবেন তাকে আমরা বলি সফটওয়্যার প্রজেক্ট ম্যানেজার. তার প্রধান দায়িত্বগুলোর মধ্যে পরে…

  • ক্লায়েন্টের কাছ থেকে প্রজেক্ট বোঝা এবং বাজেট আর টাইমিং ফাইনাল করা
  • প্রজেক্ট প্লানিং করা
  • প্রোগ্রামারদের কাজ মনিটর করা
  • ক্লায়েন্টের হস্তান্তর করা

আর এই সব কাজ করার জন্য, বিশেষ করে প্রজেক্ট মনিটর করার জন্য সফটওয়্যার প্রজেক্ট ম্যানেজার বিভিন্ন সফট ওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন ।

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : কম্পিউটার নেটওয়ার্ক টাইপ (DCN – Computer Network Types)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

সাধারণত নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি বলতে এর ভৌগলিক বিস্তৃতি বোঝায়, এটি আমাদের ব্যবহৃত সেলফোন থেকে এর ব্লুটুথ হেডফোন পর্যন্ত ক্ষুদ্র দূরত্বের হতে পারে আবার ইন্টারনেটের মত বিশ্বব্যপী বিস্তৃতও হতে পারে।

 

পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক

ক্ষুদ্রতম নেটওয়ার্ক, ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ব্যবহারে সীমাবদ্ধ। ব্লুটুথ বা ইনফ্রারেড সমৃদ্ধ যন্ত্রপাতি এই ধরণের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। ১০ মিটার সীমার এই নেটওয়ার্ক তারবিহীন মাউস, কীবোর্ড, অয়ারলেস প্রিন্টার ও টিভি রিমোটে দেখা যায়। পিকোনেট এরকম একটি পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক যেটিতে ব্লুটুথ ব্যবহার করে আটটি ডিভাইস সমন্বয় করে ব্যবহার করা হয়।

 

লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা লেন

কোনও বিল্ডিং বা একক প্রশাসনের আওতাধীন কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে লেন বলে।লেন সাধারণত কোনও সংস্থার অফিস, স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি কভার করে ।দুই বা ততোধিক কম্পিউটার নিয়ে লেন হতে পারে, আবার ১৬ মিলিয়ন একক নিয়েও লেন হওয়ার নজির রয়েছে। লেনের ক্ষেত্রে প্রিন্টার, ফাইল সার্ভার, স্ক্যানার ও ইন্টারনেট সহজে শেয়ার করা সম্ভব হয়। এটি হেভি রাউটিং এড়িয়ে চলে ও ব্যক্তিগত আইপি এড্রেস দ্বারা চালিত। এটি ইথারনেট বা টোকেন রিং টেকনোলজি ব্যবহার করে থাকে, ইথারনেট বেশি ব্যবহৃত হয়, যা স্টার টপোলজি ব্যবহার করে, টোকেন রিং টেকনোলজি অপেক্ষাকৃত কম দেখা যায়। লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা লেন তারযুক্ত বা তারবিহীন উভয় রকমই হতে পারে।

 

মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক বা মেন

ক্যাবল টিভির মত শহরাঞ্চলে দেখা যায়। ইথারনেট,টোকেন রিং, এটিএম বা এফডিডিআই যেকোনো ফর্মে এটি হতে পারে। মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক আইএসপির মাধ্যমে সম্পাদিত, এটি পারসোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ককে পরিবর্ধনের সুযোগ করে দেয়। মেন নেটওয়ার্কের মূল শক্তি হল উচ্চক্ষমতা ও গতিসম্পন্ন ফাইবার অপটিক্স। মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক লেন থেকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্কে আপলিঙ্ক প্রবর্তন করে।

 

ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক

অনেকখানি জায়গা এমনকি পুরো দেশের নেটওয়ার্কও ধারণ করতে পারে।এটি ব্যয়বহুল ও শক্তিশালী। টেলিযোগাযোগ এক ধরণের ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক। এটি এটিএম, ফ্রেম রিলে, সনেট বা Synchronous Optical Network ইত্যাদি এডভান্সড প্রযুক্তি ব্যবহার করে ।

 

ইন্টারনেটওয়ার্ক

নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ককে ইন্টারনেটওয়ার্ক বা সহজ ভাষায় ইন্টারনেট বলে। এটি টিসিপি/ আইপি প্রটোকল স্যুইট ব্যবহার করে , আইপিকে এড্রেসিং প্রটোকল হিসেবে ব্যবহার করে। বর্তমান সময়ে IPv4 বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। ইন্টারনেট এর ব্যবহারকারীকে বিশ্বব্যপী বিস্তৃত প্রচুর তথ্যের সাথে সংযুক্ত করতে পারে।এর মূল অবদানগুলোর কয়েকটি হল,

  • ওয়েবসাইট,
  • ইমেইল,
  • ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজিং,
  • ব্লগিং,
  • সোশ্যাল মিডিয়া,
  • মার্কেটিং,
  • নেটওয়ার্কিং,
  • রিসোর্স শেয়ারিং

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : সংক্ষিপ্ত বিবরণ (DCN – Overview)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

পরস্পর সংযুক্ত কম্পিউটার ও তদসংশ্লিষ্ট অনুষঙ্গ (যেমন প্রিন্টার ইত্যাদি) নিয়ে যে ব্যবস্থা তাকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলে। এই নেটওয়ার্ক তারযুক্ত বা তারবিহীন উভয় ধরনেরই হতে পারে।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে ভাগ করা যায় যথা,

 

ভৌগলিক কারণ

আমাদের নিজস্ব টেবিল, বিল্ডিং, শহর এসবের তারতম্যের ভিত্তিতে বিভাজন হতে পারে,

আন্তর্সম্পর্ক

প্রত্যেকটি একক যন্ত্রের অন্য যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত হওয়ার প্রকরণের উপর নির্ভর করে এই বিভাজন হতে পারে,

এডমিনিস্ট্রেশন

প্রশাসন ব্যক্তি মালিকানাধীণ না পাবলিক তার উপর ভিত্তি করে নেটওয়ার্কিং ভিন্ন হতে পারে,

স্থাপত্যগত কারণ

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বিভিন্ন ধরণের কারণে বিভাজিত হতে পারে যেমন ক্লায়েন্ট সার্ভার, হাইব্রিড ও অন্যান্য কারনেও স্থাপত্যগত পার্থক্য দেখা যেতে পারে।

 

নেটওয়ার্ক এপ্লিকেশন

কম্পিউটার ও তদসংশ্লিষ্ট অনুষঙ্গ নেটওয়ার্কের আকারে সংযুক্ত থাকে, এরা অনেক ধরণের সেবাদান করতে পারে,

  • প্রিন্টার ও স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করার সুবিধা দেয়,
  • ইমেইল ও এফটিপি ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদান করতে দেয়,
  • ওয়েব ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদান করতে দেয়,
  • ডাইনামিক ওয়েব পেজ ব্যবহার করে অন্য ব্যবহারকারীর সাথে তথ্য আদান প্রদান করতে দেয়,
  • আইপি ফোন, ভয়েজ কনফারেন্সের সুবিধা দেয়,
  • প্যারালাল কম্পিউটিং ,
  • ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজিংএর সুবিধা দেয়।

SSC Quiz 10 : কম্পিউটার শিক্ষা : অধ্যায় ১০ (কম্পিউটারের প্রয়োগ ও মাল্টিমিডিয়া)

[slickquiz id=12]

অ্যাপ এম এল এর ইতিহাস (AppML History)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

১৯৯৯ সালে রেফসনেস ডাটা (Refsnes Data) অ্যাপ এম এল এর প্রথম সংস্করণ ডেভলাপ করে।এমনকি তখনও অ্যাপ এম এল মূলত ওয়েব ক্লায়েন্ট ও ওয়েব সার্ভারের মধ্যে এইচটিটিপি কমিউনিকেশনের উপর নির্ভরশীল ছিল। পরবর্তীতে এই পদ্ধতিই এজ্যাক্স নামে পরিচিতি লাভ করে। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে নরওয়ের একজন গ্রাহকের আগ্রহে প্রায় ৩০টি এপ্লিকেশনের ডাটা উইন্ডোজ ডেক্সটপ থেকে ইন্টারনেটে সরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়, কেবল অ্যাপ এম এল ব্যবহার করে।

 

২০০১ সালে অ্যাপ এম এল নির্ভর সিস্টেম প্রথম বাণিজ্যিক এজ্যাক্স এপ্লিকেশন বাজারে আসে। প্রচণ্ড সফল হয়, প্রচলিত ব্যবস্থার ৭৫ শতাংশে নেমে আসে ওয়েব ডেভলাপমেন্টের সময়। তখন থেকে এর উন্নয়ন চলছে, প্রায় ১০০০ চলায়মান এপ্লিকেশন সিস্টেমের আওতায় আছে।

 

ফেব্রুয়ারী ২০১৫তে W3Schools নতুন আঙ্গিকে অ্যাপ এম এল কে বাজারে ছেড়েছে, যা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। বর্তমান সময়ের অ্যাপ এম এল এর ডিজাইন লক্ষ্যগুলো হল, ইন্টারনেটে চলবে, প্লাটফর্ম নিরপেক্ষ, প্রয়োজনীয় অনেক এপ্লিকেশন ব্যবহার করবে, ডেভলাপ প্রক্রিয়া সহজ ও নিরাপদ ইত্যাদি।

 

১৯৯৯ সালেই উপলব্ধি করা হয়েছিল, ভবিষ্যতের এপ্লিকেশন যেকোনো প্লাটফর্মেই চালানো যাবে এমন হবে। পরবর্তী সময়ে ওয়েব ডেভলাপাররা বুঝতে পারেন, ওয়েব এপ্লিকেশনগুলো আসলে ইন্টারনেট সার্ভিসে রূপ নিতে যাচ্ছে, কারণ মানুষ ইন্টারনেট সার্ভিসের উপর নির্ভরশীল হয়ে পরছে। এজন্যই ভবিষ্যতের এপ্লিকেশনগুলো SOA (Service Oriented Architecture) পরিকাঠামোতে লেখা নিরাপদ, এগুলোকে হতে হবে সাধারণ ও স্থিতিস্থাপক যাতে বিভিন্ন ধরণের চাহিদা পূরনে তা সক্ষম হয়।

 

সামনের দিনগুলোতে ওয়েব এপ্লিকেশন তৈরি সহজ হবে, হবে সহজে সম্পাদনযোগ্যও। গ্রাহক ও সার্ভার পরস্পরের মধ্যে সহজবোধ্য উপায়ে তথ্য আদানপ্রদান করতে পারবে। এপ্লিকেশনগুলোর পরিবর্তন মডেল নির্ভর হবে, কোড পরিবর্তনের উপর নির্ভর করবে না। সবচেয়ে ভাল হয় এপ্লিকেশন বিবৃতি বা পরিবর্তনের জন্য টেক্সট ফাইল(যেমন জেএসওএন) এবং সম্পাদনার জন্য এইচটিএমএল, সিএসএস ও জাভাস্ক্রিপ্টের মত মাধ্যম ব্যবহার করলে।