ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : নেটওয়ার্ক লেয়ার : ভূমিকা (DCN – Network Layer Introduction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ওএসআই মডেলের লেয়ার-৩ কে নেটওয়ার্ক লেয়ার বলা হয়, নেটওয়ার্ক লেয়ার হোষ্ট ও নেটওয়ার্ক এড্রেসিং সংক্রান্ত বিষয়, সাবনেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা ও ইন্টারনেটওয়ার্কিং নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সাবনেটের আওতায় বা বাইরে সোর্স থেকে লক্ষ্যে প্যাকেট পৌঁছে দেয়া নেটওয়ার্ক লেয়ারের দায়িত্ব। দুটি ভিন্ন সাবনেটের ভিন্ন এড্রেসিং স্কিম বা অসম্পৃক্ত এড্রেসিং টাইপ থেকে থাকতে পারে। প্রটোকলের ক্ষেত্রেও একই রকম, দুটি ভিন্ন সাবনেট ভিন্ন প্রটোকলের ক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল থাকতে পারে। এড্রেসিং স্কিম ও প্রটোকল নিয়ন্ত্রণ করে সোর্স থেকে লক্ষ্যে প্যাকেট পৌঁছে দেয়া নেটওয়ার্ক লেয়ারের দায়িত্ব।

 

লেয়ার-৩ ফাংশনালিটি

নেটওয়ার্ক লেয়ারের কাজ করে এমন যন্ত্রপাতির প্রধান কাজ থাকে রাওটিং। রাওটিং একক কোনও লক্ষ্য অর্জনের জন্য একাধিক কাজের সমন্বয় হতে পারে।যেমন,

  • ডিভাইস এবং নেটওয়ার্কিং এড্রেসিং,
  • রাওটিং টেবিল ও স্ট্যাটিক রাওটিং পূর্ণ করা,
  • ইনকামিং ও আউটগোয়িং ডাটা সাজানো ও সার্ভিসের উপযোগিতা বিশ্লেষণ করে প্যাকেটের সেট অনুসারে ফরোয়ার্ড করা,
  • দুটি ভিন্ন সাবনেটের মধ্যে ইন্টারনেটওয়ার্কিং করা,
  • লক্ষ্যে প্যাকেট পৌঁছে দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা,
  • সংযোগসহ ও সংযোগবিহীন যন্ত্রকৌশল গঠনের চেষ্টা করা

 

 

নেটওয়ার্ক লেয়ারের বৈশিষ্ট্য

আদর্শ ফাংশনালিটি অর্জিত হলে লেয়ার-৩ যেধরনের সুবিধা দিতে পারে সেগুলো হল,

  • সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের মান,
  • ভারসাম্য ও লিঙ্ক ব্যবস্থাপনা,
  • নিরাপত্তা,
  • বিভিন্ন স্কিমের সাবনেট ও প্রটোকলের সমন্বয় সাধন,
  • ফিজিকাল নেটওয়ার্ক ডিজাইনকে ভিত্তি করে বিভিন্ন লজিকাল নেটওয়ার্ক ডিজাইন,
  • L3 VPN ও টানেল এন্ডটু এন্ড কানেক্টিভিটির ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে পারে।

 

ইন্টারনেট প্রটোকল নেটওয়ার্ক লেয়ার প্রটোকল হিসেবে এন্ডটু এন্ড ডিভাইসের যোগাযোগের জন্য প্রসিদ্ধ। এটি IPv4 ও IPv6 দুটি প্রকরণে পাওয়া যায়। IPv4 বহুদিন রাজত্ব করার পর একে প্রতিস্থাপিত করতে IPv6 আনা হয়েছে IPv4 এর ক্রুটিগুলো সরিয়ে দিতে।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ডাটা লিঙ্ক কন্ট্রোল এবং প্রটোকল (DCN – Data-link Control & Protocols)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

যখন একক মাধ্যমে কোনও ডাটা ফ্রেম(লেয়ার-২ ডাটা) এক হোষ্ট থেকে অন্য হোষ্টে প্রেরণ করা হয় তখন প্রেরণকারী ও গ্রহণকারীর গতি সমান হতে হয়। গতি কোনও কারণে ভিন্ন হলে ডাটা হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই গতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুই ধরণের ব্যবস্থা করা যায়,

  • থামা এবং আবার শুরু করাঃ এই নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রয়োজনে প্রেরণকারীকে থামিয়ে রাখে সেই পর্যন্ত যতক্ষণ গ্রহণকারীর কাছ থেকে ডাটা ফ্রেম পৌঁছানো নিশ্চিত না হয়।

থামা এবং আবার শুরু করা

  • স্লাইডিং উইন্ডোঃ এই নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিতে প্রেরণকারী ও গ্রহণকারীর দ্বারা নির্ধারিত সংখ্যক ডাটা ফ্রেম পৌঁছানো নিশ্চিত হলেই কেবল প্রক্রিয়া নিশ্চিতকরণ সম্পন্ন হয়।

 

 

ভুল নিয়ন্ত্রণ

ডাটা ফ্রেম ট্রান্সমিশনের সময় এটি ট্রানজিটে হারিয়ে যেতে পারে, করাপ্টেড অবস্থায় গৃহীত হতে পারে। এজন্য প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী উভয়কে কিছু প্রটোকল দেয়া থাকে যার মাধ্যমে ডাটা ফ্রেমের হারিয়ে যাওয়া বা ‘মিস হওয়া’ জাতীয় ট্রানজিট এরর নির্ণয় করা যায়। সেক্ষেত্রে  প্রেরণকারী আবার ডাটা প্রেরণ করে এবং গ্রহণকারী আবার প্রেরণের জন্য গ্রহণকারীকে অনুরোধ জানায়। এরর কন্ট্রোল ব্যবস্থার রিকোয়ারমেন্টগুলো হল,

  • ভুল নির্ণয় বা খুঁজে বের করা,
  • ইতিবাচক এসিকে,
  • নেতিবাচক এসিকে,
  • রিট্রান্সমিশন

 

অটোম্যাটিক রিপিট রিকোয়েস্ট বা এআরকিউ ব্যবহার করে ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের মাধ্যমে ভুল নিয়ন্ত্রণের কৌশল তিনটি,

 

স্টপ এন্ড ওয়েট এআরকিউ

স্টপ এন্ড ওয়েট এআরকিউ

এই পদ্ধতিতে যে বিষয়গুলো হতে পারে তা হল,

  • প্রেরণকারী টাইমআউট কাউন্টার ব্যবহার করে,
  • যখন একটি ফ্রেম প্রেরণ করা হয়ে যায় তখন থেকে প্রেরণকারী টাইমআউট কাউন্টারে গননা শুরু করে,
  • একটি ফ্রেম প্রেরণের খবর আসলে প্রেরণকারী সারিবদ্ধভাবে পরবর্তী ফ্রেম প্রেরণ করে,
  • ফ্রেম প্রেরণের খবর না আসলে প্রেরণকারী ধরে নেয় হয় ফ্রেম অথবা তার খবর ট্রানজিটে হারিয়ে গেছে। তখন প্রেরণকারী আবার ফ্রেম প্রেরণ করে টাইমআউট কাউন্টারে গননা শুরু করে,
  • নেতিবাচক খবর আসলে প্রেরণকারী আবার সেই ফ্রেম প্রেরণ করে

 

গো ব্যাক এন এআরকিউ

স্টপ এন্ড ওয়েট এআরকিউ তাদের রিসোর্সের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারে না, গো ব্যাক এন এআরকিউ পদ্ধতিতে প্রেরণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ই একটি উইন্ডো বজায় রাখে। প্রেরক উইন্ডোর আকার প্রেরণকারীকে একাধিক ফ্রেম প্রেরণের সুযোগ করে দেয়, আগে প্রেরণকৃত ফ্রেমের কোনও নিশ্চিতকরণ সংবাদ ছাড়াই। গ্রহণকারী উইন্ডো গ্রহণকারীকে একাধিক ফ্রেম গ্রহণের ও সেই সংবাদ নিশ্চিত করার সুযোগ করে দেয়।

গো ব্যাক এন এআরকিউ

সিলেক্টিভ রিপিট এআরকিউ

সিলেক্টিভ রিপিট এআরকিউ প্রক্রিয়ায় প্রেরণকারী কেবল এনএসিকে সম্পন্ন প্যাকেট প্রেরণ করে।

সিলেক্টিভ রিপিট এআরকিউ

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ক্রুটি নির্ণয় ও সংশোধন (DCN – Error Detection & Correction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ডাটা ট্রান্সমিশনের সময় নয়েজ, ক্রসটকসহ আরও অনেক কারণে ডাটা ক্রুটিযুক্ত হতে পারে।উঁচুশ্রেণীর লেয়ারগুলো নেটওয়ার্ক স্থাপত্যকাঠামোর সরলীকরণের মাধ্যমে কাজ করে বলে হার্ডওয়ারের ডাটা প্রসেসিং সম্পর্কে খুব বেশি অবগত নয়। তারপরও পারে।উঁচুশ্রেণীর লেয়ারগুলো নির্ভুল ট্রান্সমিশন প্রত্যাশা করে। খুব বেশি হার্ডওয়ার ক্রুটিপূর্ণ ডাটার জন্য সেই প্রত্যাশামত কাজ করতে পারেনা।ভয়েজ বা ভিডিও টাইপের এপ্লিকেশন টুকটাক ক্রুটি নিয়েও চলতে পারে।

 

ডাটা লিঙ্ক লেয়ার ক্রুটি নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু কৌশল ব্যবহার করে,যাতে করে ফ্রেম(ডাটা বিট স্ট্রিম) নির্ভুলতার একটি নির্দিষ্ট মান বজায় রাখতে পারে।

 

ক্রুটির প্রকরণগুলো হল

তিন ধরণের ক্রুটি দেখা যায়,

  • সিঙ্গেল বিট এররঃ

সিঙ্গেল বিট এরর

একটি ফ্রেমে কেবল একটি বিটে ক্রুটি,

  • মাল্টিপল বিট এররঃ

মাল্টিপল বিট এরর

ফ্রেম একের বেশি এমন বিট গ্রহণ করে যা ক্রুটিপূর্ণ,

  • বড় ক্রুটিঃ

বড় ক্রুটি

একের বেশি ক্রমিক বিট ক্রুটিপূর্ণ

 

এরর কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্ট দুটি পদ্ধতিতে কাজ করে, ক্রুটি নির্ণয় ও ক্রুটি সংশোধন ।

 

ক্রুটি নির্ণয়

রিসিভড ফ্রেমের ক্রুটি নির্ণয় প্যারীটি চেক ও সাইক্লিক রেডানড্যান্সি চেক বা সিআরসি দ্বারা করা হয়। উভয় ক্ষেত্রেই মূল ডাটার সাথে কিছু অতিরিক্ত ডাটা প্রেরণ করা হয়। গ্রহীতা যন্ত্র সেই ডাটা সঠিকভাবে গ্রহণ না করলে বোঝা যায় সিস্টেম ক্রুটিমুক্ত নয়।

 

প্যারীটি চেক

মূল ডাটার সাথে এক বিট অতিরিক্ত ডাটা প্রেরণ করা হয়।তার থেকে অড প্যারীটি বা ইভেন হলে ইভেন প্যারীটি নির্ণয় করে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রুটি নির্ণয় করা হয়।

প্যারীটি চেক

 

সাইক্লিক রেডানড্যান্সি চেক বা সিআরসি

এ প্রক্রিয়ায় ভিন্নভাবে ক্রুটি নির্ণয় করা হয়।প্রেরণকৃত ডাটার বাইনারি ডিভিশনের মাধ্যমে এটি করা হয়।

সাইক্লিক রেডানড্যান্সি চেক বা সিআরসি

 

ক্রুটি সংশোধন

ডিজিটাল জগতে দুইভাবে ক্রুটি সংশোধন করা হয়,

  • ব্যাকওয়ার্ড এরর কারেকশনঃ রিসিভার গৃহীত ডাটায় ক্রুটি পেলে প্রেরককে পুনরায় ডাটা ট্রান্সমিশনের অনুরোধ জানায়,
  • ফরোয়ার্ড এরর কারেকশনঃ রিসিভার গৃহীত ডাটায় ক্রুটি পেলে ভুল সংশোধন কোড ব্যবহার করে ক্রুটি সারায়।

 

প্রথমটি অপেক্ষাকৃত সহজ, যদি পুনরায় ডাটা ট্রান্সমিশনের খরচ কম হয়। ডাটা ফ্রেমে সংশোধনের ক্ষেত্রে রিসিভারকে জানতে হবে ফ্রেমের কোন বিট ক্রুটিপূর্ণ।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ডাটা লিঙ্ক লেয়ার : ভূমিকা (DCN – Data-link Layer Introduction)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ডাটা লিঙ্ক লেয়ার ওসিআই মডেলের দ্বিতীয় লেয়ার। এই লেয়ার জটিল লেয়ারগুলোর মধ্যে একটি, এর কিছু জটিল ফাংশনালিটি ও দায়িত্বও আছে।এটি হার্ডওয়ারগত তথ্য গোপন করে উপরের লেয়ারে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করে।

ডাটা লিঙ্ক লেয়ার এমন দুটি হোষ্টের মাঝে কাজ করে যারা কিছ কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি সম্পৃক্ত, এই সরাসরি সম্পৃক্ততা দুটি পয়েন্টের মধ্যে বা সম্প্রচারগতও হতে পারে। ব্রডকাস্ট নেটওয়ার্কের সিস্টেম একই লিঙ্কে থাকে। ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের কাজ আরও জটিল হয়ে যায় যখন একক সংঘর্ষ ডোমেইনে সেটিকে অনেকগুলো হোষ্ট নিয়ে কাজ করতে হয়।

ডাটা স্ট্রিমকে বাইট বাই বাইট সিগন্যালে রূপান্তরিত করা ও তাকে সংশ্লিষ্ট হার্ডওয়ারে প্রেরণের দায়িত্বও ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের। রিসিভিং এন্ডে ডাটা লিঙ্ক লেয়ার হার্ডওয়ার থেকে ডাটা নিয়ে ফ্রেম ফরমেটে রূপ দিয়ে ঊর্ধ্বতন লেয়ারে প্রেরণ করে। ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের দুটি সাব লেয়ার আছে,

  • লজিকাল লিঙ্ক কন্ট্রোলঃ এটি প্রটোকল, ফ্লো কন্ট্রোল ও এরর কন্ট্রোল নিয়ে কাজ করে।
  • মিডিয়া এক্সেস কন্ট্রোলঃ এটি মাধ্যমের প্রকৃত কন্ট্রোল নিয়ে কাজ করে।

 

ডাটা লিঙ্ক লেয়ারের কিছু ফাংশনালিটি আছে, এগুলো হল,

  • ফ্রেমিংঃ ডাটা লিঙ্ক লেয়ার নেটওয়ার্ক লেয়ার থেকে ডাটা প্যাকেট নিয়ে ফ্রেমে প্রক্রিয়াজাত করে।
  • এড্রেসিংঃ ডাটা লিঙ্ক লেয়ার লেয়ার-২ হার্ডওয়ার এড্রেসিং মেকানিজম প্রবর্তন করে।
  • সিনক্রোনাইজেশনঃ যখন ডাটা ফ্রেমকে লিঙ্কে পাঠানো হয় তখন উভয় যন্ত্রকে সমন্বিত হতে হয়।
  • এরর কন্ট্রোলঃ এটি সিগন্যাল সংক্রান্ত ভুল নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।
  • ফ্লো কন্ট্রোলঃ দুটি যন্ত্রের ট্রান্সফারের গতি যেন এক হয় তা নিয়ন্ত্রণে ডাটা লিঙ্ক লেয়ার এটি ব্যবহার করে।
  • মাল্টি এক্সেসঃ মাল্টিপল সিস্টেমে সংঘর্ষ ছাড়া শেয়ারড মিডিয়া ব্যবহারের জন্য এই ফাংশনালিটি প্রয়োজন হয়।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : নেটওয়ার্ক সুইচিং (DCN – Network Switching)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

সুইচিং প্রক্রিয়ায় গন্তব্যের দিকে অগ্রসরমান কোনও পোর্টে অন্য পোর্ট থেকে আসা পকেট অগ্রসর করা হয়। যখন ডাটা একটি পোর্টে আসে তখন তাকে ইনগ্রেস বলে, আর যখন একটি পোর্ট ছেড়ে যায় তখন তাকে বলে এগ্রেস। বোর্ড লেভেলে সুইচিং দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত হয়ে থাকে,

 

  • যোগাযোগবিহীনঃ ফরোয়ার্ডিং টেবিলের সূত্রে ডাটা ফরোয়ার্ড হয়ে থাকে। পূর্ববর্তী কোনও সম্পর্কের প্রয়োজন হয়না, তথ্যসূত্রিতা ঐচ্ছিক।
  • যোগাযোগ সমৃদ্ধঃ লক্ষ্যের দিকে ডাটা সুইচিংএর আগে দুটি এন্ডপয়েন্টের মাঝে একটি প্রাকগঠিত সার্কিট প্রয়োজন হয়, ডাটা সেই সার্কিটে প্রবাহিত(ফরোয়ার্ড) হয়। ট্রান্সফার সম্পন্ন হলে সেই সার্কিট পরবর্তী ব্যবহারের জন্য রেখে দেয়া হয় অথবা তখনি সরিয়ে ফেলা হয়।

 

সার্কিট সুইচিং

যখন দুটি নড কোনও সার্থক যোগাযোগ মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে তখন তাকে সার্কিট সুইচিং বলে। এক্ষেত্রে পূর্বনির্ধারিত রুট প্রয়োজন যা থেকে ডাটা প্রবাহিত হবে, অন্য ডাটা প্রযোজ্য হবে না। সার্কিট সুইচিংএ অবশ্যই সার্কিট গঠিত হতে হবে ।

সার্কিট স্থায়ী ও অস্থায়ী, দুরকমেরই হয়। সার্কিট সুইচিং ব্যবহার করা এপ্লিকেশনগুলো তিনটি ধাপের মধ্য দিয়ে যায়,

 

  • সার্কিট প্রতিষ্ঠা করা,
  • ডাটা ট্রান্সফার,
  • সার্কিটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা

সার্কিট সুইচিং

 

সার্কিট সুইচিং ভয়েস এপ্লিকেশনের জন্য তৈরি হয়েছিল। টেলিফোন সার্কিট সুইচিংএর সবচেয়ে ভাল উদাহরণ। কল করার আগে যে কল করছে আর যাকে কল করা হচ্ছে তাদের মধ্যে নেটওয়ার্কে ভার্চুয়াল পাথ তৈরি হচ্ছে।

 

 

ম্যাসেজ সুইচিং

সার্কিট সুইচিং ও প্যাকেট সুইচিংএর মধ্যবর্তী ধাপ হল ম্যাসেজ সুইচিং, এতে পুরো ম্যাসেজকে একটি ডাটা ইউনিট হিসেবে ধরা হয় এবং সম্পূর্ণ কাঠামোকে সুইচিং বা ট্রান্সফার করানো হয়। ম্যাসেজ সুইচিংএ কাজ করা কোনও সুইচ প্রথমে পুরো ম্যাসেজ রিসিভ করে বাফার করতে থাকে, পরবর্তী হপে ট্রান্সফার করার মত রিসোর্স পাওয়ার আগপর্যন্ত। পরবর্তী হপে বড় ম্যাসেজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে ম্যাসেজ জমা করে রাখা হয়, সুইচ অপেক্ষা করে।

ম্যাসেজ সুইচিং

এই পদ্ধতিকে সার্কিট সুইচিংএর বিকল্প হিসেবে ধরা হয়।

 

ম্যাসেজ সুইচিংএর কিছু ড্রব্যাক আছে,

 

  • ট্রানজিট পাথের সকল সার্কিটে ম্যাসেজ সংরক্ষণের উপযুক্ত পর্যাপ্ত জায়গা প্রয়োজন,
  • স্টোর-এন্ড-ফরোয়ার্ড ব্যবস্থা ও রিসোর্স প্রাপ্যতার জন্য অপেক্ষা করার জন্য ম্যাসেজ সুইচিং অনেক ধীর প্রক্রিয়া,
  • ম্যাসেজ সুইচিং স্ট্রিমিং মিডিয়া ও রিয়েলটাইম এপ্লিকেশনের জন্য উপযোগী সমাধান নয়।

 

 

প্যাকেট সুইচিং

ম্যাসেজ সুইচিংএর সময় কমানো থেকে প্যাকেট সুইচিং ধারনার উদ্ভব, এতে ম্যাসেজকে ছোটছোট প্যাকেটে ভাগ করা হয়।সুইচিং তথ্যকে প্রত্যেক প্যাকেটের হিডারে (header) স্বাধীনভাবে সম্প্রচারের জন্য রাখা হয়।

 

প্যাকেট সুইচিং

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : মাল্টিপ্লেক্সিং (DCN – Multiplexing)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

মাল্টিপ্লেক্সিং একটি প্রক্রিয়া যেটিতে কোনও শেয়ারড লিঙ্কে ট্রান্সমিশনের ডিজিটাল ও এনালগ স্ট্রিম একসাথে প্রক্রিয়াজাত হয়। মাল্টিপ্লেক্সিং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মিডিয়ামকে নিম্ন ক্ষমতাসম্পন্ন লজিকাল মিডিয়ামে বিভাজিত করে যা পরবর্তীতে বিভিন্ন স্ট্রিম দ্বারা শেয়ারড হয়। এ প্রক্রিয়ায় আলো (অপটিক্যাল ফাইবার) ও বাতাসে (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি) যোগাযোগ সম্ভব।

 

ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং

ফ্রিকোয়েন্সি যখন বাহক তখন ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং প্রযোজ্য হয়। ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং একধরনের এনালগ প্রযুক্তি, এটি স্পেকট্রাম বা কেরিয়ার ব্যান্ডউইথকে লজিকাল চ্যানেলে ছড়িয়ে দেয় এবং প্রত্যেক চ্যানেলে একজন ইউজার বরাদ্ধ থাকে। চ্যানেল ফ্রিকোয়েন্সির উপর প্রত্যেক ইউজারের অবাধ ও স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ থাকে। কোনও চ্যানেল একটি আরেকটি উপর ওভারল্যাপ করে যায় না, চ্যানেলগুলো গার্ড ব্যান্ড দ্বারা আলাদা করা আছে। গার্ড ব্যান্ড এক ধরণের ফ্রিকোয়েন্সি কোনও চ্যানেলই যাদের ব্যবহার করছে না।

 

টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং

টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং প্রাথমিক অবস্থায় ডিজিটাল সিগন্যালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও এরা এনালগ সিগন্যালের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে। টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিংএ শেয়ারড চ্যানেল টাইম স্লটের ভিত্তিতে এর ইউজারদের মধ্যে বন্টিত থাকে। প্রত্যেক ইউজার বরাদ্ধকৃত সময়ের মধ্যে ডাটা ট্রান্সমিট করতে পারে। টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং সমন্বয়মূলক(সিঙ্ক্রোনাইজেশন) মোডে কাজ করে।

 

ওয়েভলেন্থ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং

আলোর বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য থাকে। ফাইবার অপটিক মোডে মাল্টিপল অপটিক্যাল কেরিয়ার সিগন্যাল বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করে অপটিক্যাল ফাইবারে মাল্টিপ্লেক্সড হয়। এটি এনালগ মাল্টিপ্লেক্সিং কৌশল এবং বস্তুত ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিংএর মতই কাজ করে কিন্তু আলোকে সিগন্যাল হিসেবে ব্যবহার করে।

 

উপরন্তু, প্রতিটা তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্য টাইম ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং অধিক ডাটা সিগন্যাল সংরক্ষণ সমন্বয় করে।

 

কোড ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং

মাল্টিপল ডাটা সিগন্যাল কোড ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং ব্যবহার করে একক ফ্রিকোয়েন্সির উপর দিয়ে ট্রান্সমিটেড হতে পারে। ফ্রিকোয়েন্সি ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং ফ্রিকোয়েন্সিকে ক্ষুদ্রতর চ্যানেলে ভাগ করে ফেলে কিন্তু কোড ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং ব্যবহারকারীকে ইউনিক কোড ব্যবহার করে পূর্ণ ব্যান্ডউইথ ও সবসময় ট্রান্সমিশনের সুযোগ দেয়। কোড ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং সিগন্যাল ছড়িয়ে দিতে অরথোগোনাল কোড ব্যবহার করে। প্রত্যেক ষ্টেশন ‘চিপ’ নামক ইউনিক কোড দ্বারা নির্ধারিত। সিগন্যাল এসব কোডের সাথে ব্যান্ডউইথের ভেতরে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারে, রিসিভার অর্থাৎ সিগন্যাল গ্রহণকারী আগে থেকেই জানে ‘চিপ কোড’ সিগন্যাল গ্রহণ করা হতে পারে।

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ওয়ারলেস ট্রান্সমিশন (DCN – Wireless Transmission)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ওয়ারলেস ট্রান্সমিশন আনগাইডেড মিডিয়ার একটি রূপ। ওয়ারলেস যোগাযোগের ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক যন্ত্রের মধ্যে বস্তুগত কোনও সম্পর্ক স্থাপিত হয় না, বেতার ব্যবস্থায় যোগাযোগ সম্পন্ন হয়। ওয়ারলেস সিগন্যাল বাতাসে ছড়ায় এবং উপযুক্ত এন্টেনা দ্বারা গৃহীত ও এর ব্যাখ্যা বিবৃত হয়। যখন কম্পিউটার বা বেতার যন্ত্রের ইলেকট্রিক সার্কিটে এন্টেনা লাগানো হয় তখন এটি ডিজিটাল ডাটাকে বেতার সিগন্যালে পরিবর্তিত করে এবং এর ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জের মধ্যে সবখানে ছড়িয়ে দেয়। অপর প্রান্তের গ্রহীতা সেই বেতার সিগন্যাল গ্রহণ করে তাকে আবারো ডিজিটাল ডাটায় পরিণত করে।

ওয়ারলেস ট্রান্সমিশন

 

রেডিও ট্রান্সমিশন

রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা সহজ কারণ এগুলোর বড় তরঙ্গদৈর্ঘ্য দেয়াল বা এরকম কাঠামো ভেদ করে যেতে পারে। এক মিলিমিটারের মত ক্ষুদ্র থেকে ১ লক্ষ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃহৎ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বেতার তরঙ্গ হতে পারে। ৩ হার্জ(অত্যন্ত ছোট) থেকে ৩০০ গিগাহার্জ(অত্যন্ত বড়) রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি হতে পারে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ছয়টি ব্যান্ডে ভাগ করা আছে।

রেডিও ট্রান্সমিশন

 

রেডিও ট্রান্সমিশন আর্থ

 

মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন

১০০ মেগাহার্জের বেশি তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ সোজা লাইনে চলার প্রবণতা দেখায় এবং নির্দিষ্ট ষ্টেশনে বিমিংএর মাধ্যমে এদের দ্বারা সিগন্যাল প্রেরণ করা যায়। যেহেতু মাইক্রোওয়েভ সরল রেখায় চলে, তাই প্রেরক ও গ্রাহক যন্ত্র দৃষ্টিরেখার সমান্তরাল হতে হয়। মাইক্রোওয়েভের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১ মিলিমিটার থেকে ১ মিটার ও ফ্রিকোয়েন্সি ৩০০ গিগাহার্জ থেকে ৪৩০ টেরাহার্জ পর্যন্ত হতে পারে।

 

মাইক্রোওয়েভ ট্রান্সমিশন

 

ইনফ্রারেড ট্রান্সমিশন

ইনফ্রারেড তরঙ্গ দৃশ্যমান আলোক বর্ণালী ও মাইক্রোওয়েভের মাঝামাঝি একটি বিষয়, তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৭০০ ন্যানোমিটার থেকে ১ মিলিমিটার ও ফ্রিকোয়েন্সি ৩০০ মেগাহার্জ থেকে ৩০০ গিগাহার্জ পর্যন্ত হতে পারে।স্বল্পদূরত্বে যোগাযোগের ক্ষেত্রে যেমন টেলিভিশনের রিমোট কন্ট্রোলে এদের ব্যবহার করা হয়।

 

আলোক ট্রান্সমিশন

সর্বোচ্চ তাড়িতচৌম্বক বর্ণালী যা ডাটা ট্রান্সফারের জন্য ব্যবহৃত হয় তা হল আলোক বা অপটিক্যাল সিগনালিং। লেজার পদ্ধতিতে এটি সম্ভব হয়। লেজার দেয়াল, বৃষ্টি বা ঘন কুয়াশা ভেদ করতে পারে না, এর ব্যবহৃত ফ্রিকোয়েন্সির কারণে এটি সরল রেখায় চলে।

আলোক ট্রান্সমিশন

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ট্রান্সমিশন মিডিয়া (DCN – Transmission Media)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ট্রান্সমিশন মিডিয়া হল কম্পিউটার নেটওয়ার্কের যোগাযোগের বস্তুগত মাধ্যম।

 

চৌম্বক মাধ্যম

নেটওয়ার্কের সৃষ্টিরও আগে থেকে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডাটা স্থানান্তর ও সংরক্ষণের জন্য চৌম্বক মাধ্যম ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমান যুগের দ্রুতগতির ইন্টারনেটের তুলনায় একটু পুরনো ফ্যাশনের হলেও, বিশাল আকারের ডাটার ক্ষেত্রে এখনও চৌম্বক মাধ্যম চলছে।

 

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল একক মাধ্যম থেকে দুটো প্লাস্টিকে মোড়ানো তামার তার যা পরস্পরের উপর জড়ানো থাকে। একটি তার মূল সিগন্যাল বহন করে, অন্যটি গ্রাউন্ড রেফারেন্সের জন্য ব্যবহৃত হয়। টুইস্টগুলো নয়েজ ও ক্রসটক কমায়(তাড়িতচৌম্বক ইন্টারফেরেন্সের জন্য)। দুই ধরণের টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল হয়,

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

  • শিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার(এসটিপি)ক্যাবল।
  • আনশিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার(ইউটিপি) ক্যাবল।

 

কোএক্সিয়াল ক্যাবল

কোএক্সিয়াল ক্যাবলে তামার দুটি তার থাকে, মূল তারটি কেন্দ্রে থাকে, এটি নিরেট কন্ডাক্টর দিয়ে তৈরি। মূল অংশটি ইন্সুলেটর মোড়ানো আবরণ দিয়ে আলাদা করা, এটি একটি প্লাস্টিকের আবরণ দিয়ে আবৃত।সেই আবরনের উপরে দ্বিতীয় তারটি জড়ানো থাকে। এর উপরেও ইন্সুলেটর মোড়ানো আবরণ থাকে। পুরো জিনিসটি প্লাস্টিকের আবরণ দ্বারা জড়ানো থাকে। এর কাঠামোগত কারণে এটি টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলের চেয়ে বেশি ফ্রিকোয়েন্সির সিগন্যাল বহন করতে পারে।

কোএক্সিয়াল ক্যাবল

 

পাওয়ার লাইন

পাওয়ার লাইন কমুনিকেশন লেয়ার-১ প্রযুক্তি যা ডাটা সিগন্যাল ট্রান্সমিট করতে পাওয়ার ক্যাবল ব্যবহার করে। পাওয়ার লাইন কমুনিকেশনে তারের মাধ্যমে মডিউলেটেড ডাটা প্রেরণ করা হয়। অপর প্রান্তের গ্রহীতা সেই ডাটাকে ডিমডিউলেটেড করে ইন্টারপ্রেট করে। দুই ধরণের পাওয়ার লাইন পাওয়া যায়,

  • সরু ব্যান্ডের পিএলসি এবং
  • ব্রডব্যান্ড পিএলসি

 

ফাইবার অপটিক্স

ফাইবার অপটিক্স আলোর গুণাবলী অনুসারে কাজ করে। ক্রান্তিকোণে আলো পরলে তা ৯০ ডিগ্রি কোণে প্রতিফলিত হয়। এই মূলনীতি ফাইবার অপটিক্সে কাজে লাগানো হয়। ফাইবার অপটিক্সের মূল(কোর)অংশকে উচ্চ মানের কাঁচ বা প্লাস্টিক দ্বারা তৈরি করা হয়। এর ভিতর দিয়ে আলো প্রবাহিত হয়, অন্য প্রান্তে সেই নিঃসৃত আলোর স্ট্রিমকে বৈদ্যুতিক ডাটায় পরিণত করা হয়। এটি সবচেয়ে বেশি গতির মাধ্যম। একক মোড ফাইবার ও বহু মোড ফাইবার, এই দুই প্রকার ফাইবার একাজে পাওয়া যায়। ফাইবার অপটিক্স একমুখী ও দ্বিমুখী এই দুই প্রকারের সক্ষমতা সম্পন্ন হতে পারে।

ফাইবার অপটিক্স

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : এনালগ ট্রান্সমিশন : (DCN – Analog Transmission)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

এনালগ মাধ্যমে ডাটা প্রেরণ করতে হলে ডাটাকে এনালগ সিগন্যালে রূপান্তরিত করে নিতে হয়। ডাটা রূপান্তরের ক্ষেত্রে দুটি বিষয় হয়ে থাকে,

  • ব্যান্ডপাসঃ ফিল্টারের মাধ্যমে চাহিদামত ফ্রিকোয়েন্সি ফিল্টারিং ও অতিক্রম করানো হয়।
  • লো পাসঃ লো পাস একধরনের ফিল্টার যার মধ্য দিয়ে কম ফ্রিকোয়েন্সির সিগন্যাল প্রেরিত হয়।

 

ডিজিটাল থেকে এনলগে রূপান্তর

যখন এক কম্পিউটার থেকে অন্য কোনটিতে এনালগ ক্যারিয়ারের মাধ্যমে ডাটা স্থানান্তর করা হ্য় তখন সেটি প্রথমে এনালগ সিগন্যালে রূপান্তরিত হয়, এনালগ সিগন্যালকে সেই ডাটাকে ডিজিটাল ডাটায় রিফ্লেক্ট করার মত করে মডিফাই করে নেয়া হয়। কোনও এনালগ ডাটা এর এমপ্লিচিউড, ফ্রিকোয়েন্সি ও ফেজের মাধ্যমে বিশেষায়িত হয়। ডিজিটাল থেকে এনলগে রূপান্তর তিন ধরণের হতে পারে,

  • এমপ্লিচিউড শিফট কীইংঃ এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় এনালগ ক্যারিয়ার সিগন্যালের এমপ্লিচিউড বাইনারি ডাটা প্রদর্শনের উদ্দেশে রূপান্তরিত হয়।

এমপ্লিচিউড শিফট কীইং

  • ফ্রিকোয়েন্সি শিফট কীইংঃ এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় এনালগ ক্যারিয়ার সিগন্যালের ফ্রিকোয়েন্সি বাইনারি ডাটা প্রদর্শনের উদ্দেশে রূপান্তরিত হয়। এই পদ্ধতি দুটি ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে।

ফ্রিকোয়েন্সি শিফট কীইং

  • ফেজ শিফট কীইংঃ এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় মূল ক্যারিয়ার সিগন্যালের ফেজ বাইনারি ডাটা প্রদর্শনের উদ্দেশে পরিবর্তিত হয়।

ফেজ শিফট কীইং

  • কোয়াড্রেচার ফেজ শিফট কীইংঃ কোয়াড্রেচার ফেজ শিফট কীইং দুটি বাইনারি ডিজিট একসাথে প্রদর্শনের জন্য ফেজকে রূপান্তরিত করে। এটি দুটি ভিন্ন ফেজে হয়ে থাকে।

 

এনালগ থেকে এনলগে রূপান্তর

এনালগ ডাটা প্রদর্শনের জন্যও এনালগ সিগন্যাল রূপান্তরিত হতে পারে। এই প্রক্রিয়াকে এনালগ মডুলেশন বলা হয়। ব্যান্ডপাস যখন হয় তখন এনালগ মডুলেশন প্রয়োজন হয়। এটি তিনভাবে হতে পারে,

এনালগ থেকে এনলগে রূপান্তর

  • এমপ্লিচিউড মডুলেশনঃ এই মডুলেশন প্রক্রিয়ায় ক্যারিয়ার সিগন্যালের এমপ্লিচিউড এনালগ ডাটা প্রদর্শনের উদ্দেশে রূপান্তরিত হয়।

এমপ্লিচিউড মডুলেশন

  • ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশনঃ এই মডুলেশন প্রক্রিয়ায় ক্যারিয়ার সিগন্যালের ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশনের ভোল্টেজ লেভেলের পরিবর্তন(এনালগ ডাটা)প্রদর্শনের উদ্দেশে রূপান্তরিত হয়।

ফ্রিকোয়েন্সি মডুলেশন

  • ফেজ মডুলেশনঃ এই মডুলেশন প্রক্রিয়ায় ক্যারিয়ার সিগন্যালের ফেজ মডুলেশনের ভোল্টেজ লেভেলের পরিবর্তন(এনালগ ডাটা)প্রদর্শনের উদ্দেশে পরিবর্তিত হয়।

ফেজ মডুলেশন

 

ডেটা কমিউনিকেশন ও কম্পিউটার নেটওয়ার্ক : ডিজিটাল ট্রান্সমিশন : (DCN – Digital Transmission)

রিদওয়ান বিন শামীম

 

ডাটা বা তথ্য দুইভাবে সংরক্ষণ করা যায়, ডিজিটাল ও এনালগ পদ্ধতিতে। কম্পিউটারে ডাটা সংরক্ষণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হয়। ডাটার মত সিগন্যালও ডিজিটাল ও এনালগ এই দুই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায়। ডাটাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রান্সমিশনের জন্য একে আগে ডিজিটাল ফরম্যাটে পরিবর্তিত করে নিতে হয়।

 

ডিজিটাল থেকে ডিজিটালে রূপান্তর

লাইন কোডিং ও ব্লক কোডিং, এই দুই ভাবে ডিজিটাল থেকে ডিজিটালে রূপান্তর করা যায়। সব ধরণের যোগাযোগের জন্য লাইন কোডিং জরুরী যেখানে ব্লক কোডিং ঐচ্ছিক।

 

লাইন কোডিং

ডিজিটাল ডাটাকে ডিজিটাল সিগন্যালে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে লাইন কোডিং বলে। ডিজিটাল ডাটাকে বাইনারি ফরম্যাটে পাওয়া যায়, একে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সিরিজের অন্তর্নিহিতভাবে সংরক্ষণ করা যায়।

লাইন কোডিং

লাইন কোডিং

 

ইউনিপোলার এনকোডিং

ইউনিপোলার এনকোডিং স্কিম ডাটা রিপ্রেজেন্ট করার জন্য সিঙ্গেল ভোল্টেজ লেভেল ব্যবহার করে, এক্ষেত্রে বাইনারি ১ প্রকাশ করতে উঁচু ভোল্টেজ ও বাইনারি ০ প্রকাশ করতে কোনও ভোল্টেজ ট্রান্সমিটেড হয় না। এদের ইউনিপোলার নন-রিটার্ন-টু-জিরোও বলা হয়।

ইউনিপোলার এনকোডিং

 

পোলার এনকোডিং

পোলার এনকোডিং স্কিম বাইনারি মান প্রকাশের জন্য মাল্টিপল ভোল্টেজ লেভেল ব্যবহার করে। পোলার এনকোডিং কে চার রূপে পাওয়া যায়,

  • পোলার ননরিটার্ন টু জিরো

পোলার ননরিটার্ন টু জিরো

  • রিটার্ন টু জিরো,

রিটার্ন টু জিরো

  • ম্যানচেস্টার,
  • ডিফারেন্সিয়াল ম্যানচেস্টার

 

বাইপোলার এনকোডিং

বাইপোলার এনকোডিং তিন ধরণের ভোল্টেজ লেভেল ব্যবহার করে, পজেটিভ, নেগেটিভ ও জিরো।

বাইপোলার এনকোডিং

 

ব্লক কোডিং

ব্লক কোডিং তিন ধরণের হয়,

  • ডিভিশন,
  • সাবস্টিটিউশন,
  • কম্বিনেশন

 

ব্লক কোডিং সম্পন্ন হওয়ার পর একে লাইন কোডেড করা হয়।

 

এনালগ থেকে ডিজিটাল রূপান্তর

এনালগ তরঙ্গকে ডিজিটাল ডাটায় পরিণত করতে পালস কোড মডুলেশন ব্যবহার করা হয়। এটি তিন ধাপে হয়,

  • সেম্পলিং

সেম্পলিং

  • কোয়ান্টাইজেশন

কোয়ান্টাইজেশন

  • এনকোডিং

এনকোডিং

 

ট্রান্সমিশন মোড

দুটি কম্পিউটারে কীভাবে ডাটা ট্রান্সমিটেড হবে তা নির্ণয় করে ট্রান্সমিশন মোড,এর দুটি প্রকরণ ঘটে,

  • প্যারালাল ট্রান্সমিশন

প্যারালাল ট্রান্সমিশন

  • সিরিয়াল ট্রান্সমিশন।

সিরিয়াল ট্রান্সমিশন

 

সিরিয়াল ট্রান্সমিশন দুই রকমের হয়,

  • এসিনক্রোনাস সিরিয়াল ট্রান্সমিশন
  • সিনক্রোনাস সিরিয়াল ট্রান্সমিশন