অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বাংলা ভিডিও টিউটোরিয়াল : আর্থিক বিনিয়োগ ছাড়াই ট্রাফিক এর উৎস এবং ব্লগার ডিজাইন পার্ট ০২
ব্যবসার জন্য আপনার ওয়েব সাইটটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওয়েব সাইটটি যদি সুন্দর ও প্রফেশনাল না হয়, ব্যবসায়িক লক্ষ্য পূরণে অনেকাংশেই ব্যর্থ হবেন আপনি। এই গুরুত্ব উপলব্ধি করে আপনার উচিত হবে একজন যোগ্য ও পেশাদার ওয়েব ডিজাইনার দিয়ে আপনার সাইটটি বানানো।
আপনার জন্য উপযুক্ত ওয়েব ডিজাইনার কে হবেন, কীভাবে বেছে নেবেন একজন দক্ষ ডিজাইনার- তা জানতে দেখে দিন নিচের টিপসঃ
ওয়েব ডিজাইনার খোঁজ করার আগে ভালো করে জেনে নিন- আসলে আপনি কী চান আপনার ওয়েব সাইট নিয়ে, কী আপনার লক্ষ্য। আপনি অত্যাধুনিক উচ্চমানের ট্রেন্ডি ও ভিজুয়াল সাইট চান? নাকি আপনি ট্রাডিশনাল ও গতানুগতিক একটি ওয়েব সাইট চান? আপনি কি এমন কন্টেন্ট যোগ করতে চান যা প্রতিনিয়ত সম্পাদনা বা আপডেট দরকার হবে? নাকি কালেভদ্রে ডেভেলপারকে দিয়ে করালেই চলবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনার ওয়েব সাইট ডিজাইনার নির্বাচনে ভূমিকা রাখবে।
ওয়েব ডিজাইনারের রুচিবোধ, দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বুঝতে তার প্রোফাইল ও পূর্বের কাজ দেখে নিতে হবে আপনার। এতে সহজেই আপনার পছন্দের সাথে একটা তুলনামূলক চিত্র আপনি পেয়ে যাবেন, যা সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সহায়ক হবে।
ওয়েব সাইটের ডিজাইন খরচ নির্ভর করবে আপনার প্রজেক্টের প্রয়োজনের ওপর। আর প্রজেক্টের প্রয়োজনীয়তা ঠিক করে দেবে ওয়েব সাইটটি কতোটা জটিল ফর্মেটের হবে, কতো পৃষ্ঠার হবে এবং বিশেষ কোনো ফাংশন যোগ করতে হবে কি না। এসবই আপনার বাজেট নির্ধারণে পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে।
ওয়েব ডিজাইনার কে কাজ দেবার আগে ভালো করে জেনে নিন যে সে নির্ধারিত সময়ে আপনার কাজ শেষ করে দিতে পারবে কি না। এই প্রশ্নটা সরাসরি করুনঃ “আপনি কি আমার প্রজেক্ট, আমার দেয়া সময়ে করে দিতে পারবেন?” আরো আলোচনা করে নিন - কাজের সুযোগগুলো (Scope of work) এবং কতোটা পরিবর্তনের অনুরোধ (Change Requests) আপনি করতে পারবেন।
আপনার ওয়েব সাইটের জন্য ডিজাইনার বেছে নেবার আগেই নিশ্চিত করে নিন- ডিজাইন ও কন্টেন্ট স্বত্ব (property rights) কার হবে, কীভাবে হবে? এ ব্যাপারে লিখিত দলিল করে নিন। পরবর্তীতে যে কোনো জটিলতা এড়াতে এ বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
(Sirajum Galib Munir)
পদ্মা সেতুর কাজ শুরুই হয়নি। কিন্তু মক আপের কল্যাণে টিভিতে এর বার্ডস আই প্রিভিউ নিশ্চয়ই দেখেছেন। খুঁটিনাটি কোন ডিটেইলসই বাদ যায়নি সেই প্রিভিউতে। উদাহরণের জন্য পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গ টানলেও সেতুর মক আপ কিন্তু আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। ওটা ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ। আমরা বরং গ্রাফিক ডিজাইনের মক আপ নিয়ে কথা বলি। উপরের চিত্র ১ এ দেখুন মনে হচ্ছে যেন অনেকগুলো বিজনেস কার্ড টেবিলের উপর সাজিয়ে ক্যামেরায় ছবি তোলা হয়েছে। কিন্তু কার্ডগুলো এখনো প্রিন্ট করাই হয়নি। ব্যাপারটা পদ্মা সেতুর মতই হয়ে গেল তাই না? তৈরির আগেই প্রিভিউ। ফটোশপে এ কাজটি বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। একটি কার্ডের মক আপ করার পর নতুন একটি কার্ডের মক আপ যখন করতে যাবেন তখন একই কাজ আবারও দীর্ঘ সময় ধরে করতে হবে। আর এই ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতেই ফটোশপ সিএস ৪ সংস্করণে সর্বপ্রথম স্মার্ট অবজেক্ট ফিচার যুক্ত করা হয়। এই ফিচার কোন বিশেষ লেয়ারের ইমেজের ইফেক্ট, ট্রান্সফর্মেশন ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে অন্য ইমেজ দিয়ে প্রতিস্থাপন করার সুযোগ দেয়। এবারে চিত্র ২ দেখুন। কার্ডগুলো হুবহু ১ এর মত করেই সাজানো। এখানে এই কার্ডগুলোই হচ্ছে স্মার্ট অবজেক্ট যা অন্য যেকোনো ইমেজ দিয়ে রিপ্লেস করতে পারেন। এতে রিপ্লেস করা ইমেজকে একইভাবে টেবিলের উপর পড়ে থাকতে দেখবেন। এটাই হচ্ছে স্মার্ট অবজেক্টের মহাত্ন। আর স্মার্ট অবজেক্ট ফিচার ব্যবহার করেই একটি মক আপ একাধিক ডিজাইনের উপর প্রয়োগ করা যায়। নতুনদের ক্ষেত্রে যেটি হয় তারা অনেক কষ্ট করে একটি সুন্দর ডিজাইন দাঁড় করান। কিন্তু সুন্দর একটি প্রেজেন্টেশনের অভাবে তাদের ডিজাইনটি অনেক সাধারণ ডিজাইনের নিচে চাপা পড়ে যায়। আর তাই নতুনদের জন্যই এই পোস্ট। পোস্টের শুরুতে বিশাল এক ভূমিকা পড়েই ফেলেছেন। এছাড়াও থাকছে মক আপের গুরুত্ব নিয়ে সামান্য কিছু প্যাঁচাল, মক আপের রকমফের, ব্যবহার পদ্ধতি এবং কিছু কেস স্টাডি। আর সবশেষে উপসংহার টাইপের কিছু একটাতো থাকছেই। তাই ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত হয়ে যান। মক আপের প্রয়োজনীয়তাঃ একটি সাইনবোর্ডের ডিজাইন পিসিতে দেখেই বলে দেয়া যায়না যে সাইনবোর্ডটি যেখানে লাগানো হবে সেখানে ঠিক কেমন দেখাবে। তবে মক আপ প্রিভিউ দেখে মোটামুটি ধারনা পাওয়া যেতে পারে। এতে ডেমো সাইনবোর্ড তৈরির খরচটাও সাশ্রয় হয়। তবে এধরনের ক্লায়েন্ট খুব কমই আছে যারা নিজেদের সাইনবোর্ডের মক আপ নিজেদের বিল্ডিং এর ছবি দিয়েই করতে বলে। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিজাইনাররা ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করেই মক আপ ব্যবহার করে থাকেন। এরকম একটি সাইট graphicburger.com যেখান থেকে ফ্রি মক আপ ডাউনোলোড করা যায়।
মক আপের রকমফেরঃ সাধারণত লোগো, বিজনেস কার্ড, ফ্লায়ার, ব্রাশিউর, ওয়েব ডিজাইন, ট-শার্ট ডিজাইন, UI ইত্যাদির মক আপই বেশি ব্যবহৃত হয় এবং ইন্টারনেটে সহজলভ্য। তবে আরও অনেক ধরনের মক আপ আছে এবং আপনি নিজেও তৈরি করে নিতে পারেন। যদিও মক আপ তৈরি অনেক অ্যাডভান্স লেভেলের কাজ।
ব্যবহারঃ শুরুতে যে বিজনেস কার্ডের মক আপটি দেখেছেন সেটিকেই আমরা উদাহরণ হিসেবে প্রয়োগ করব। এটি ডাউনোলোড করুন এই লিংক থেকে bit.ly/1kJoGYk
১. প্রথমেই আপনার কার্ডের ডিজাইনের একটি জেপিজি ফাইল তৈরি করে নিন। এজন্য PSD ফাইলটি ওপেন করে File>Save as ক্লিক করুন। Save as Type এ জেপিজি সিলেক্ট করে একটি নাম দিয়ে সেভ করুন। কোয়ালিটি Maximum সিলেক্ট করুন। এভাবে কার্ডের ফ্রন্ট ও ব্যাক সাইডের জন্য আলাদা জেপিজি ফাইল তৈরি করুন। তবে ডিজাইনের কাজটি যদি ইলাস্ট্রেটরে করে থাকেন তবে এটি না করলেও চলবে।
২. ডাউনোলোড করা মক আপ ফাইলটি ওপেন করুন।
৩. লেয়ার উইন্ডোতে দেখুন তিনটি লেয়ার গ্রুপ আছে। ফ্রন্ট সাইডের মক আপ করতে Front লেয়ার গ্রুপের বাম পাশের ত্রিভুজ চিহ্নে ক্লিক করে এক্সপান্ড করুন।
৪. এখানে দেখবেন Edit this object নামে একটি লেয়ার আছে এবং এই লেয়ারটির আইকন অন্যগুলির থেকে আলাদা। অর্থাৎ এই লেয়ারে একটি স্মার্ট অবজেক্ট রয়েছে। এই স্মার্ট অবজেক্টের আইকনে (নামের উপরে নয়) ডাবল ক্লিক করুন। একটি উইন্ডো আসবে। এতে ওকে ক্লিক করুন।
৫. নতুন একটি ট্যাব ওপেন হবে। এতে একটি কার্ডের ডিজাইন দেখতে পাবেন। আমাদের কাজ এই ডিজাইনকে আমাদের তৈরি ডিজাইন দিয়ে রিপ্লেস করা। তৈরি করে রাখা জেপিজি ফাইলটি এর উপর ড্রাগ করুন কিংবা ইলাস্ট্রেটর থেকে কপি করে পেস্ট করুন।
৬. যদি ইলাস্ট্রেটর থেকে কপি করে থাকেন তাহলে Paste as নামে একটি উইন্ডো আসবে। স্মার্ট অবজেক্টে চেক করে ওকে চাপুন।
৭. এবারে পেস্ট করা ডিজাইনটি স্কেল করে বড় করুন এবং ক্যানভাসের প্রান্ত পর্যন্ত টেনে দিন।
৮. প্রয়োজনে অন্য লেয়ারগুলি চোখের আইকনে ক্লিক করে হাইড করে দিন।
৯. Ctrl+S চাপুন এবং আগের ট্যাবে ফিরে যান। এবারে ম্যাজিক দেখুন।
১০. একইভাবে ব্যাক সাইডের মক আপ করে ফেলুন। এটাই মক আপ ব্যবহারের সাধারণ পদ্ধতি। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সব ধরনের মক আপ ব্যবহারের পদ্ধতি একই।
কিছু কেস স্টাডিঃ মক আপে কোন স্মার্ট অবজেক্ট নেইঃ কিছু কিছু মক আপে বাই ডিফল্ট কোন স্মার্ট অবজেক্ট থাকে না। তবে স্মার্ট অবজেক্ট না থাকলেও Your design here, Paste your logo here ইত্যাদি নামে কোন লেয়ার অবশ্যই আছে। এই ধরনের লেয়ারের নামের উপর রাইট ক্লিক করে Convert to smart object এ ক্লিক করুন। এবারে স্মার্ট অবজেক্ট তৈরি হয়ে গেলে আগের নিয়মে বাকি কাজ করুন।
মক আপে ব্লিড বাদ দেয়া যায় নাঃ প্রিন্ট ডিজাইনের ক্ষেত্রে ডিজাইনের মূল অংশের সাথে ব্লিড এর বাড়তি অংশটুকুও মক আপে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। যদিও রিসাইজ করার সময় বাড়তি অংশ ক্যানভাসের বাইরে রেখে বাদ দেয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে আন্দাজে বাদ দিতে গিয়ে ভুল হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই মূল ডিজাইনের ট্রিম লাইন (বর্ডার) বরাবর একটি উজ্জ্বল রঙের Rectangle একে দিতে পারেন যা রিসাইজ করে বাদ দেয়ার সময় মূল ডিজাইনের প্রান্ত সনাক্ত করতে সাহায্য করবে। ইলাস্ট্রেটরের মাস্ক ব্যবহার করেও এ সমস্যা এড়াতে পারেন। যদি কোন ডিজাইনের কর্নারগুলো রাউন্ড আকৃতির হয় তাহলে মাস্ক করার আগে Rectangleএর কর্নারগুলিও রাউন্ড করে নিন।
মক আপের কালার পরিবর্তনঃ সাধারণত টি শার্টের মক আপে কালারের জন্য আলাদা একটি লেয়ার থাকে। এর বাম পাশের আইকনে ডাবল ক্লিক করলে কালার পিকার উইন্ডো আসে। এখান থেকে টি শার্টের জন্য একটি কালার সিলেক্ট করে ওকে বাটনে ক্লিক করুন। এবার দেখুন টি শার্টের আগের কালার পাল্টে আপনার পছন্দ করা কালার হয়ে গেছে। আবার UI এর মক আপের ক্ষেত্রে আই-ফোনের পাঁচটি কালার সহ একটি আলাদা লেয়ার গ্রুপ থাকে। এই গ্রুপটি এক্সপান্ড করে আপনার পছন্দের কালার বাদে বাকি চারটি কালারের লেয়ার হাইড করে দিন। তাহলেই হবে।
এবারে উপসংহারে যাওয়া যাক। মক আপ ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই জেনে নিন মার্কেট প্লেসে মক আপ ব্যবহার করা যাবে কিনা। আমার জানা মতে ৯৯ ডিজাইন ছাড়া বাকি সব মার্কেটপ্লেসের লোগো কনটেস্টে মক আপ ব্যবহার নিষিদ্ধ। তাই এব্যাপারে সতর্ক হোন।