Category Archives: খেলাধুলা । Sports

খেলাধুলা । Sports

বিশ্বে বাংলাদেশের ক্রিকেট তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে

বিশ্বে বাংলাদেশের ক্রিকেট তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে

সৈয়দ আলী শাফিন

যখন ক্রিকেট বিশ্ব বাংলাদেশকে আমলে নিত না, তখনও এদেশের ক্রিকেট প্রেমী মানুষ ক্রিকেট নিয়ে আশা করত আর তাদের সমর্থন দিয়ে যেত সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তাই যখন একদিনের ক্রিকেটে, বাংলাদেশ বিশ্বকে চমকে দিল তাদের অসাধারন খেলা উপহার দিয়ে, তখন এদেশের মানুষ এতদিন পর সফলতায় আত্নহারা হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন চ্যাম্পিনস ট্রফিতে নিজের জায়গা করে নিয়েছে পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে। তারা পাকিস্তানকে বাংলা ওয়াশ আর ভারত ও সাইথ আফ্রিকাকে সিরিজে হারিয়ে নিজেদের আসন পোক্ত করে নিয়েছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট কিন্তু এই সাফল্যের অনেক আগে থেকেই এদেশের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। তাই বিশ্ব অবাক হয়ে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে, এদেশের মানুষ কেন এতো ক্রিকেট পাগল...

একজন ভারতীয় গবেষক মনে করেন, এদেশের মানুষের আসলে খুশি হবার খুব বেশি কিছু নেই। একমাত্র ক্রিকেট এদেশের মানুষকে সত্যিকারের আনন্দ দিতে পারে।

মোহাম্মদ ইসাম (একজন ক্রিকেট ফ্যান, ক্রিকেটার, দি ডেইলি ষ্টার এবং ই এস পি এন ক্রিক ইনফো এর খেলার সাংবাদিক) এখানে সুধরে দিয়েছ্ন। তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট কে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। ৮০ দশকের জেনারশনের মতো তিনিও বড় হয়েছেন ক্রিকেটকে ঘিরে। তিনি বলেছেন, "ক্রিকেট হলো এদেশের মানুষের সাথে খুব সহজে মানিয়ে যাওয়া একটি খেলা। যখন তাদের দল জিতে যায় মানুষ খুবই খুশি হয়ে ওঠেন" এমন না যে এদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। এবং চেষ্টা করছে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হবার। ভারতের মতো এখানেও আছে গরিব, ধনী সব ধরনের মানুষ। একমাত্র ক্রিকেট এই সব মানুষকে এক কাতারে নিয়ে আসে।

বাংলাদেশে যখন ধনীর বাহিনী এসেছিল, তখনো চলছিল রমজান মাস। তারপরও ক্রিকেট পাগল মানুষ সেহেরি খেয়ে রাত জেগে দিনে না ঘুমিয়ে লাল সবুজ পোশাকে চলে এসেছিল স্টেডিয়ামে। শুধু মাত্র তাদের সমর্থন জানানোর জন্য।

মুস্তাফিজুরের দারুণ সাফল্য!! বাকি তরুণরা জ্বলে উঠতে পারছে না। Mustafizur red hot, but other youngsters lukewarm

রিদওয়ান বিন শামীম

মুস্তাফিজুরের রেকর্ড গড়া ওয়ানডে অভিষেক সিরিজে অন্য তরুণ প্রতিভা যারা আছেন তাঁরা সেরকম ঝলসে উঠতে পারেননি। প্রথম ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেট নেয়ার পর মুস্তাফিজুরের উপর চলে আসে পাদপ্রদীপের আলো। তাঁর সহজ সারল্য ও বোলিং একশনের ক্ষুরধার বৈচিত্র্য ও নতুনত্ব আরেক অভিষিক্ত প্রতিভা, তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা লিটন দাশের উপর থেকে দর্শকদের মনোযোগ কমিয়ে দিয়েছে অনেকটাই।

সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান তাদের ওডিআই ক্যারিয়ারের শুরুতে যে ফোকাস পেয়েছিলেন তা ধরে রাখতে পারেননি।
মুস্তাফিজুর প্রথম ওয়ানডেতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্পেলে দুটি ও তিনটি করে উইকেট নিয়েছিলেন কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেকেন্ড স্পেলেই নিয়ে নেন পাঁচ উইকেট। দুই ক্ষেত্রেই শুরুতে তাঁকে প্রচুর ব্যবহার করার পর ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতে আবার আক্রমনে ফেরত আনা হয়। বুধবারের খেলায় তাঁকে দ্বিতীয় স্পেলে আনা হয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও আম্বতি রায়ডুর ব্যাটিঙের সময়, পরিকল্পনা সফল ছিল কারণ ধোনি ও রায়ডু কপালজোরে বেঁচে যান দুটি আনপ্লেয়েবল ডেলিভারি থেকে, ৪৩তম ও ৪৭তম ওভারে ফিরে এসে ৪৭তম ওভারে সুরেশ রাইনার উইকেট নিয়ে একসাথে দুটি রেকর্ডের তালিকায় স্থান করে নেন তিনি,প্রথম তিন ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি ও তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি।
তরুণ তুর্কীদের মধ্যে এরপরেই আসে সৌম্য সরকারের নাম। ক্লাসিকাল ব্যাটিঙের সাথে মানসম্মত ৫৪, ৩৪ ও ৪০ রান তিন ম্যাচে খারাপ না, সেই সাথে ছিল প্রতিভার ঝলকানিও। লিটন দাশ তাঁর প্রতিভা অনুযায়ী এই সিরিজে তেমন ভাল করতে পারেন নি, সাব্বিরেরও সুযোগ ছিল তৃতীয় ওয়ানডেতে দীর্ঘ সময় ক্রিজে থাকার। ক্যাপ্টেন মাসরাফিও স্বীকার করলেন, মুস্তাফিজুরের তুলনায়, বাকি তরুণরা প্রত্যাশামত খেলতে পারেননি।