হাতে আর খুব বেশি দিন সময় নেই, ইতোমধ্যে একদল এর ভাইভা এই শুরু হল বলে,
সংক্ষেপে তাই কিছু জিনিস বলে রাখি, কাজে আসবে আশা করিঃ
ভাইভার পোষাক ও পরিচ্ছদঃ
অবশ্যই ফরমাল ড্রেস আপ এ যাবেন, বলাই বাহুল্য, ছেলেদের জন্য শার্ট সাদা কিংবা হালকা রঙের হওয়া ভাল, সাথে কন্ট্রাস্টিং প্যান্ট । কাপড় চোপড়ে যতদূর সম্ভব ঝিক ঝাক চিক চাক স্টাইল পরিহার করে প্লেইন ধরণের কিছু বাছাই করুন । খেয়াল রাখবেন আপনার জুতার কালার আর বেল্টের কালার যেন একই হয় । মানে আপনি যদি কালো বেল্ট পড়েন তাহলে জুতো যেন কালো রঙের ই হয় (এটা বিসিএস/ পিএসসি রুল না, সাদামাটা ইন্টারভিউ নির্দেশিকা)। যদি আপনি দাঁড়ি রাখেন তাহলে তা যেন কোন বিশেষ স্টাইল করা দাঁড়ি না হয় , আর যদি ক্লিন শেভড হিসেবে সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তাহলে সেভাবেই যাবেন । খোঁচা খোঁচা কিংবা স্টাইল করা চিপ দাঁড়ি গোফ নিয়ে যাবেন না, এই নিয়ে কথা শোনার কিংবা আপনার অবমূল্যায়ন হবার ভাল সম্ভাবনা আছে । চুলের পারিপাট্যও আবশ্যক, তবে আপনার মাথায় টাক পড়ে গেছে কিংবা চুল সাদা হয়ে গেছে এ নিয়ে ঘাবড়াবেন না 😉
হ্যা, যদি আপনার ভাইভা শীতের মধ্যে হয় ট্রাই করবেন ব্লেজার/ ফরমাল কোর্ট পরিধান করে যাবেন, বিশেষত যাদের প্রথম চয়েস ফরেন এফেয়ার্স ।এই পরামর্শ টা নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেয়া, আমার ভাইভা বোর্ড ছিল ওয়াজেদ আলী স্যারের বোর্ড । আমাকে ছিলে কেটে লবণ লাগাতে লাগাতে প্রায় যখন শেষ অবস্থা, আমাকে বললেন, “ তোমার attire তো ঠিক নাই, আসছ ফরেন এফেয়ার্স ফার্স্ট চয়েস দিয়ে, অথচ স্যুট টাই পড় নি কেন?”
উল্লেখ্য, আমার ভাইভা ছিল ৭ এপ্রিল, চৈত্রের দাবদাহের মধ্যে, আমার স্কিনে সমস্যার কারণে গরম সহ্য করতে পারি না, আমি যে পোশাকে বাসা থেকে ভাইভা বোর্ডে গিয়েছিলাম, বাইরে দাঁড়িয়ে গরমে সেদ্ধ হয়ে সেই শার্ট চেঞ্জ করে ব্যাক আপ শার্ট পড়ে ভাইভা র রুমে ঢুকি । স্যুট কোর্ট টাই আমার ঐ সময়ে সহ্য হবার না তা তো আসলে স্যার বুঝবেন না L ।
মেয়েদের জন্য, আমার অভিজ্ঞতা বলে আপুদের অধিকাংশকেই শাড়ি পড়তে দেখেছি । কাউকে জমকালো সাজ, অলংকার এমন টি দেখি নি, শাড়ির রঙ কিংবা ধরণ ও কিন্তু বিয়ে বাড়ি র শাড়ি না J । তবে যেসব আপুরা পরীক্ষা দিতে যাবেন যদি শাড়ি তে কম্ফোর্ট ফিল না করে থাকেন তাহলে স্যালোয়ার কামিজ পড়ে যেতে পারেন, অনেকেই যায় এবং এটা খুব বড় ডিল না অবশ্যই ।
ভাইভার প্রাক প্রস্ততি ঃ
আদর্শ লিপির কথা মনে হলেও সত্যি বলতে আপনার ভাল চেয়েই বলব, আপনার ভাইভার আগের রাতে খুব বেশি জাগবেন না, ৬-৮ ঘন্টা একটানা ঘুম খুব জরুরি, সকালে উঠে যাবেন, গোসল করে বের হওয়াটা ভাল, ফ্রেশ লাগবে।
অনেকে অনেক দূর থেকে আসবেন, সো আসার পথে যথাসম্ভব হ্যাসেল ফ্রি ভাবে যেভাবে আসা যায় ট্রাই করবেন, যেন কাপড় কুচকে না যায় কিংবা আপনাকে বিধ্বস্ত মনে না হয় ।
আপনি যত্ত আগেই আসেন না কেন আপনাকে পিএসসির সাম্নের রাস্তাতেই ৯ঃ৩০-৯ঃ৪৫ পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকতে হবে,আশপাশে কোথাও টয়লেট কিংবা চেঞ্জ রুম ও পাবেন না । সাথে করে কোন ছোট/ বড় ভাই/ বোন বা এসিস্ট্ করতে পারে এমন কাউকে আনলে ভাল হয় । আসতে আসতে ঐ দিনের ১-২ টা সংবাদ পত্র আনতে পারেন, শুধুমাত্র হেডলাইন গুলোতে চোখ বুলাবেন, দেখবেন কোন উল্লেখযোগ্য খবর আছে কিনা , কারণ বোর্ডে চট করে ধরে বসতেই পারে, অনেকে ধরেও ।
আর হ্যা, ঐ দিনের ইংরেজি তারিখ, বাংলা তারিখ, আরবী তারিখ জেনে যাবেন । এর থেকে সাথে সাথে জেনে নেবেন ঐ দিন টি কোন কারণে জাতীয়/ আন্তর্জাতিক কারণে বিখ্যাত কিনা । মানে হল, ঐ দিন কী কোন দিবস আছে কিনা। মোবাইলে ডাটা কানেকশন রাখবেন দয়া করে, পিএসসি র সামনে আপনাকে কেউ ওয়াই ফাই দিবে না, আপনি এসে দাঁড়িয়ে হুট করে একটা কিছু মনে হল যে আপনি ভুলে গেছেন কিংবা মনে পড়ছে না, চট করে গুগল করতে এই জিনিস টা লাগবে ।
পিএসসি তে ঢোকার পরঃ
সাড়ে নটার পরে আপনাদের সবাইকে পিএসসি তে ঢোকাবে, প্রথমে রিসিপসনে আপনি আপনার সাথে নেয়া ব্যাগ, মোবাইল, মানিব্যাগ এগুলো রেখে যেতে পারেন, কেবল মাত্র আপনার দরকারি কাগজ পত্র একটা ট্রান্সপারেন্ট ব্যাগ/ ফাইলে করে নিয়ে ঢুকবেন (এভাবেই ঢোকাবে ইনফ্যাক্ট)। কী কী কাগজ পত্র লাগবে আশা করি পিএসসি র ওয়েবসাইট মারফত জেনে গিয়েছেন (এই জিনিস টা কে অবহেলা করবেন না দয়া করে, কারণ এতোগুলো কাগজ ফিল আপ করতে হয়, আপনি ভাইভার ২ দিন আগে ঠান্ডা মাথায় অভিজ্ঞ কারও সাথে কথা বলে ফিল আপ করে নেবেন, এখানে এক আধটু ভুলের মাশুল আপনি হাড়ে হাড়ে পরে হলেও টের পাবেন, অনেকের রেজাল্ট আটকেও যায় কিংবা বাতিল ও হতে পারে, সো প্রতিটা ফর্ম খুব ভাল ভাবে ফিল আপ করবেন)।
যাহোক, রিসিপশনে আপনার সব কিছু রাখার পর একটা নিচ তলা রুমে সবাই বসে অপেক্ষা করবেন । কিছুক্ষণ পরে আপনাদের ১৫-২০ জন করে করে একটা গ্রুপ ধরে এক এক ফ্লোরের এক এক রুমে নিয়ে যাবে, আই মিন এক এক বোর্ডে । সেখানে আপনাকে আবারও চেয়ারে বসে অপেক্ষা করা লাগবে, রোলের সিরিয়াল ওয়াইজ আপনার ডাক পড়বে । সেখানে মেইন রুমে ঢুকার আগেই একজন ভদ্রলোক আপনার কাগজ পত্র গুলো নিবেন এবং চেক করে দেখবেন সব ঠিক আছে কিনা, সেগুলো আপনার ক্রম অনুযায়ী বোর্ড রুমে পাঠানো হবে ।
বোর্ড রুমে ঢোকার পরেঃ
নার্ভাস না হতে বলা বৃথা আসলে, প্রতি ১০ জনে ৮ জন ই নার্ভাস হবেন । তবু, গলার স্বর স্বাভাবিক রেখে ঢোকার অনুমতি নিয়ে রুমে ঢুকবেন, ঢুকে সালাম দিতে পারেন । বোর্ড প্রধান বা মেম্বার রাই আপনাকে বসতে বলবে, আপনি বসবেন কিন্তু খেয়াল রাখবেন যেন বসতে গিয়ে চেয়ারে কোন অনাকাংখিত শব্দ যাতে না হয় । অনেকের বাজে অভ্যাস টেবিলে হাত তুলে বসা ইন্টারভিউ এ , যেটা অনেকেই খুব বাজে চোখে দেখে, এটা পরিহার করবেন ।
এবারে বলি খুব সাধারণ ভাবে যে প্রশ্ন গুলো আপনাকে করবেই, কিংবা আপনি সম্মুখীন হবেন ই ...
# প্রায় সব ভাইভা বোর্ডে এবং সব ক্যান্ডিডেট কেই ইংরেজিতে জিজ্ঞাসা করবে, প্লিজ ইন্ট্রোডিউস ইউরসেলফ...
আপনাকে এখানে , “স্যার বাংলায় বলি ?” এই সুযোগ টাও নেই, আপনি টিকতে চাইলে ইংরেজিতে উত্তর দেবেন। অনেকে আপনাকে বলবে আমার অমুক তমুকে বাংলায় উত্তর দিছে, তার ক্যাডার হইছে , এমন গপ্পো ভুলে যান, যদি বা হাতে গোণা ১-২ জন এর হয়ও আপনি মনে রাখেন এই ইন্টারভিউ এ আপনার ইংরেজি তে উত্তর করা কিংবা নিজেকে সুন্দরভাবে রিপ্রেজেন্ট করার উপর আপনার ইম্প্রেশন তৈরি ৮০% নির্ভরশীল ।
তো কী বলবেন নিজের ব্যাপারে?
১৪ গোষ্ঠীর পরিচিতি না, এখানে আপনার পুরো নাম, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরিবারের (বাবা ও মা কেবল)এবং দেশের বাড়ির সংক্ষিপ্ত পরিচিতির সাথে নিজের বর্তমান পেশা (বেকার হলে বলবেন, সিভিল সার্ভিসে যোগদান করতে চেষ্টারত) মিলিয়ে ২-৩ লাইনে বলার ট্রাই করবেন । কথাগুলো যেন মুখস্ত গরু রচনা টাইপ না হয়, খেয়াল রাখবেন আর রোবোকপের মতন এক দিকে তাকিয়ে কথা বলবেন না, হাল্কা ডানে বায়ে মাথা নাড়াবেন, মনে রাখবেন এখানে আপনার অডিয়েন্স রুমে আপনি ছাড়া বাকি ৩ জন ই ।
#এরপর আপনাকে প্রশ্ন করা হবে আপনার চয়েস নিয়ে , কেন এডমিন/ফরেন/ইকোনমিক/পুলিশ প্রথম চয়েসে দিয়েছেন...
# আপনি যে সাব্জেক্টে অনার্স/মাস্টার্স করেছেন সেটার সাথে আপনার চয়েসের সামঞ্জস্য কী ...
মানে আপনি পড়াশোনা করেছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ, তো আপনি এডমিন হয়ে কী করবেন, বা আপনি ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে কেন এডমিন হতে চাইছেন ?
- এই প্রশ্নগুলো খুব ই ভাইটাল, এটা দিয়ে সিম্পলি আপনি স্মার্ট না খ্যাত তা যাচাই হয়ে যাবে, ক্ষ্যাত লোকজন বলবে, ক্যাডারের রাজা এডমিন, অনেক সুযোগ সুবিধা আছে , সবাই সম্মান করবে –এই টাইপ কথা
আর যিনি স্মার্ট তিনি তার পড়াশোনা কিংবা কোন বিশেষ যোগ্যতার সাথে কিংবা কোন বিশেষ ইচ্ছার সাথে তার চয়েস কে কো রিলেট করে সুন্দর উত্তর করবেন ।
- মনে রাখবেন, এই প্রশ্নটার উত্তর আপনি যত ইউনিক দিতে পারবেন আপনি ঐ চয়েসের বিষয়ভিত্তিক উত্তর কমে পেরেও ভাইভাতে ভাল মার্ক্স পাবার আশা করতে পারবেন ততটা ।
# অনেক বোর্ডে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে কাবু করতে ট্রাই করবে, “তুমি পড়ছ এপ্লাইড কেমিস্ট্রি, তো তুমি ফরেন এফেয়ার্সে এসে কী করবা ? কেন তোমাকে গভমেন্ একজন কূটনৈতিক বানাবে ?”
এমন ভাবেই প্রশ্ন করবে যেন আপনি মস্ত অপরাধ করে ফেলেছেন- কুল থাকার ট্রাই করবেন এবং কোন প্রকার অভদ্রতা কিংবা অযাচিত কথা বলবেন না, ঠান্ডা মাথায় উত্তর করবেন,আবারও বলছি গত বাঁধা কথা না বলে স্মার্টলি উত্তর করবেন, যাতে আপনার উত্তর টা শুনে উনারা এটুকু বুঝে যে এই ছেলে/মেয়ে বুকিশ না ।
# আপনার জন্ম তারিখ টা খেয়াল করেন, এই তারিখে কোন বিখ্যাত /কুখ্যাত ঘটনা ঘটেছে কী ?
ধরেন এই তারিখে মুজিব নগর সরকার গঠিত হয়েছিল,তো আপনার মাথায় যেন তা থাকে, আবার কোন বিখ্যাত ব্যক্তির জন্মদিন হলেও আপনার জানা থাকা উচিত কিংবা কোন বিশেষ দিবস ।
# আপনার দেশের বাড়ি কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর ব্যাপারে, এগুলোর নামকরণের ব্যাপারে জ্ঞান রাখুন ।
ধরুন আপনার দেশের বাড়ি কুষ্টিয়ায়ে, কুষ্টিয়া কী জন্যে বিখ্যাত ? খালি তিলের খাজার জন্য ? লালন শা থেকে শুরু করে আর যা কিছু জানা দরকার জেনে নিন, আপনার চয়েস যদি এডমিন/পুলিশ হয়ে থাকে তো নিজ জেলা/থানার পুলিশ ও প্রশাসব প্রধানের নাম জানা টা ভাল ... জেলার নদ নদী, বিশেষ কী উতপন্ন হয় এগুলোও ...
আবার ধরেন আপনি গুরু দয়াল কলেজ থেকে পাস করেছেন, হু ওয়াজ দিস গুরু দয়াল ? মানে কার নামে কেন নামকরণ হলো এসব জেনে রাখবেন । ( আমাকে নটরডেম এর অর্থ, উতপত্তি, মিশন কী এসব নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল)
# আগেই বলেছি এখানে আপনাকে আপনার জ্ঞান যাচাই করবে না, আপনাকে তারা অব্জারভ করবে আপনার স্মার্টনেস, আপনার পোলাইটনেস আপনার কথা বলার, কারও সামনে নিজেকে উপস্থাপন করার যোগ্যতা, কোন টাফ সিচুয়েশন কীভাবে না অস্থির হয়ে হ্যান্ডেল করেন সেটা দেখবে ।
একটা উদাহরণ বলি, বুয়েটের কোন ব্যাচের এক ভাইয়া র প্রথম চয়েস ছিল ট্যাক্স, তো তাকে তার নাম ধাম জিজ্ঞাসার পরে দেশের বাড়ি কোন নদীর তীরে জিজ্ঞাসা করল, উনি উত্তর দিলেন পদ্মা, এরপরে তাকে জিজ্ঞাসা করে বসলেন, পদ্মার দৈর্ঘ্য কত ? তিনি তো তা মুখস্ত করেন নাই... এরপরে সেটা না পারায় তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তো তাহলে পদ্মার কয়েকটা শাখা নদীর নাম বল, উনি শাখা নদী র নাম যা যা জানেন কার কোন তা শাখা না জেনেই বলতে লাগ্লেন, তো তাকে থামিয়ে দিয়ে প্রশ্ন কর্তা বললেন, তাহলে বল পুনর্ভবার দৈর্ঘ্য কত ? যে পদ্মার দৈর্ঘ্যই জানে না, যে পুনর্ভবা নদীর দৈর্ঘ্য কী করে জানে ? :v তো এটাও পারলেন না, এরপর আরও কিছু নদী নিয়েই প্রশ্ন করলেন, ঐ ভাইয়া কিছুর উত্তর ই দিতে পারলেন না ... এদিকে প্রশ্ন কর্তা তো বললনে, “ তুমি তো দেখি কোন প্রশ্নের উত্তর ই পারলে না” ...
এখন বলেন ঐ ভাইয়া কী বলবে, স্যার আমার প্রথম চয়েস ট্যাক্স, আপনি ট্যাক্স নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করেন ... উনি চুপ করে রইলেন, বোর্ড প্রধান তার দিকে হতাশ দৃষ্টি দিয়ে চলে যেতে বললেন, ঐ ভাইয়া তো হতাশ, এ কেমন ভাইভা ??!! অথচ উনার সেই ক্যাডার প্রাপ্তি ঠিক ই ঘটেছিল ...
সো, আপনি আশা করবেন না আপনি ইয়ামেনের কোন শহরের চৌরাস্তার কী নাম তা জানবেন কিংবা মার্সিডিজ বেঞ্চের লাস্ট সিরিজের নামরকরণ ও আপনার জানা থাকাই লাগবে ...কিন্তু না জানা সিচুয়েশন টা কেও ঠান্ডা মাথায় হ্যানডল করুন ... কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রেগে যাবেন না আবার এমন ভাব ও ধরবেন না যে আমারে এইটা কী ধরে , কিছু হইল !!!
# আমি আগের পর্বে বলেছিলাম আপনাকে যে চয়েস দিয়েছেন কিংবা যে বিষয়ে পড়েছেন অনার্স, মাস্টার্সে সেটার পাশাপাশি আরও অনেক উদ্ভট কিছু জিজ্ঞাসা করতেই পারে , আপনি রেডি থাকবেন, আপনাকে হুট করে বলতে পারে গঞ্জ আছে বাংলাদেশের এমন কয়েকটা জেলার নাম বল ... কিংবা ধরেন একটা ট্রান্সলেশন কিংবা বানান ধরে দেখতে পারে, আপনি নাই পারেন কিন্তু রিএক্ট কীভাবে করেন ...
# আবার মনে করেন, আপনার এলাকা মুক্তিযুদ্ধে কোন সেক্টরের আন্ডারে ছিল, সেই সেক্টরের কমান্ডারের নাম, কবে স্বাধীন হয়েছে এগুলো তো খুব ই কমন প্রশ্ন ... আপনার জেলার কোন সাহিত্যিকের নাম, তাদের বিখ্যাত সাহিত্য কর্ম বা গান, কবিতা এগুলো জেনে যাবেন ...
# আপনাকে আরও জিজ্ঞাসা করতে পারে আপনার এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস কেমন ছিল, যদি গান কিংবা কবিতা আবৃত্তি করতে পারেন বা জানেন তাহলে তো ভালই । যদি ছবি তোলা শখ হয় তো সেটাও বলবেন, আবার আপনার কাজ সুন্দরি মেয়েদের ফটো তোলা এই টাইপ কথা বলে এসেন না 😛 খেলাধূলা নিয়ে আপনার আগ্রহ থাকলে তাও বলবেন, তারা কিছু প্রশ্ন ও করতে পারে ...
# আরেকটা খুব খুব গুরুত্বপূর্ন জিনিস হল মানচিত্রের সাথে আপনার পরিচয় কেমন ? রুমের ভেতরে দেয়ালে বড় করে একটা বাংলাদেশের আরেকটা বিশ্বের মানচিত্র লাগানো থাকে, আপনাকে হুট করে বলতেই পারে, “যাও গিয়ে পাবনার সাথিয়া উপজেলা টা দেখাও তো”
কিংবা এভাবেও বলতে পারে, মানচিত্রে দেখাও তো বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত কোথায় হয় ?
দেশের মানচিত্রের সাথে তো বটেই বিশ্ব মানচিত্র নিয়েও জানবেন, আপনাকে বলতে পারে, নৌ পথে ভারত থেকে স্পেনে যাবার রাস্তা টা দেখাও... কিংবা ক্রেমলিন কোথায় ? রামাল্লা কোথায় ?
মানচিত্রে কুর্দিস্তান দেখাতে পারবা ? কিংবা আই এস এর বৃহত্তম ঘাটি টা কোন শহরে ?
এগুলো কিন্তু এক সাথে আপনার অনেক কিছু যাচাই করার প্রশ্ন, তাই যারা ফরেন এফেয়ার্স/এডমিন/পুলিশ প্রথমে চয়েস দিয়েছেন বাংলাদেশ অ আন্তর্জতিক মানচিত্র খুব ভাল করে শিখবেন ...
এতোক্ষণ যা আলোচনা করলাম মোটামুটি তা হল সব ক্যাডারের জন্য সাধারণ আলোচনা, এসব ছাড়াও যে এই ক্যাডার প্রথম বা দ্বিতীয় চয়েসে দিয়েছেন সেগুলোর ব্যাসিক যে প্রশ্ন গুলো সেগুলো শিখে যাবেন, বিশেষ করে আপনার পছন্দের ক্যাডারের পদ ক্রম, দেশে ঐ ক্যাডার সংশ্লিষ্ট সচিব/ মন্ত্রী/ উপ মন্ত্রীর নাম... ঐ বিষয়ের সংজ্ঞা, শ্রেণীবিভাগ ...এসবের জন্য প্রথম পর্বে বেশ কিছু বই সাজেস্ট করা ছিল, আশা করি পড়তে শুরু করেছেন J
সবাইকে আবারও শুভ কামনা । ধন্যবাদ J